
ছবি: সংগৃহীত
স্পেনের বেকারত্বের হার ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১২.২৯%, যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ১১.৮০% — এমনটাই জানিয়েছে দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসও (১১.৮০%) ছাড়িয়ে গেছে এই হার, যা দেশটির শ্রমবাজারের চলমান সংকটকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
স্পেনে বেকারত্বের এই ঊর্ধ্বগতির মূল কারণ হলো অস্থায়ী চাকরির চুক্তির উপর নির্ভরশীলতা, বিশেষ করে পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে। পাশাপাশি, দীর্ঘদিনের নিম্ন উৎপাদনশীলতাও এ সমস্যাকে আরও প্রকট করেছে। তবে এই বৃদ্ধির পরও বিভিন্ন শ্রমবাজার সংস্কারের কারণে বেকারত্বের হার এখনও ঐতিহাসিকভাবে নিম্নস্তরের কাছাকাছি রয়েছে।
২০২২ সালের শ্রমবাজার সংস্কার অস্থায়ী চুক্তির হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যা কর্মসংস্থানের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে এবং বেকারত্ব হ্রাসে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই অগ্রগতি ধরে রাখতে ভবিষ্যতে আরও সংস্কার প্রয়োজন।
ডাচ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএনজি পূর্বাভাস দিয়েছে যে ২০২৪ সালে স্পেনের গড় বেকারত্বের হার ১১.৬% থেকে ২০২৫ সালে ধীরে ধীরে কমে ১১.২% এ নেমে আসবে। যদিও শক্তিশালী অভিবাসন প্রবাহের কারণে শ্রমবাজারে কিছুটা চাপ থাকতে পারে, তবুও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এই চ্যালেঞ্জ সামলাতে সহায়ক হতে পারে।
এদিকে, স্পেনের খুচরা বিক্রয় খাতেও মন্দার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসের বার্ষিক খুচরা বিক্রয়ের হার ছিল ০.৬%, যা ফেব্রুয়ারির ১.৮% থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে এটি টানা ষোল মাস ধরে বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। মাসিক ভিত্তিতে মার্চ মাসে খুচরা বিক্রি ০.৫% হ্রাস পেয়েছে।
উচ্চ বেকারত্বের পরও স্পেন এখনো বিদেশি কর্মীদের জন্য আকর্ষণীয় কর্মস্থল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার শ্রমিকদের জন্য। ভাষার মিল স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সহজে মিশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে, পাশাপাশি ভালো বেতনের কাজ পাওয়াকেও সহজ করে তোলে।
এ অভিবাসী শ্রমিকদের কারণে স্পেনের অর্থনীতি বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই দক্ষ হলেও নিজ দেশে উপযুক্ত কাজের সুযোগের অভাবে স্পেনে আসছেন। স্পেনের আতিথেয়তা ও প্রযুক্তি খাত এই দক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে চাঙ্গা হয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ অভিবাসনের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তুলনীয়।
তত্যসূত্র: ইউরো নিউজ
আবীর