ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

গাজায় পানি, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবাগুলি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১৩ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১১:৩১, ১৩ মার্চ ২০২৫

গাজায় পানি, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবাগুলি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ

 

চলমান উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে, ইসরায়েল এবং হামাস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তাদের আলোচনাগুলি অব্যাহত রেখেছে, এবং আরব দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গাজা নিয়ে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে সক্রিয়ভাবে উদ্যোগী হয়েছে। এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলমান সংঘাতের সমাধান খুঁজতে সংঘর্ষের মধ্যে আটকে পড়া হাজার হাজার নাগরিকের মানবিক বিপর্যয়ের প্রতি সারা বিশ্ব থেকে বাড়ন্ত উদ্বেগের মধ্যে শুরু হয়েছে।

ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে আলোচনা, যা সর্বশেষ উত্তেজনা শুরুর পর থেকে মাঝে মাঝে অনুষ্ঠিত হয়েছে, একটি অসংলগ্ন যুদ্ধবিরতি এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্রীভূত। আলোচনা সম্পর্কিত সূত্রগুলি বলছে যে, যদিও এই আলোচনা এখনও একটি নির্দিষ্ট সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি, উভয় পক্ষই গাজার উপর সংঘাতের যে মানবিক প্রভাব পড়েছে তা সম্পর্কে সচেতন।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠনগুলি গাজা উপত্যকায় পরিস্থিতির সংকটের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যেখানে পানি, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসা সরবরাহের মতো মৌলিক সেবাগুলির ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে, ইসরায়েল হামাসের অবস্থা এবং গাজায় তার সামরিক সক্ষমতা নিয়ে উদ্বিগ্ন, অপরদিকে হামাস ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধ এবং অবরোধের অবসানের দাবি তুলেছে।

এই আলোচনার পাশাপাশি, আরব দেশগুলি, যার মধ্যে মিশর, জর্ডান এবং সৌদি আরব অন্তর্ভুক্ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি ব্যাপক পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। প্রস্তাবটি, যা এখন মার্কিন কর্মকর্তারা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করছেন, গাজার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি টেকসই শান্তির পথ নির্ধারণে গুরুত্ব আরোপ করেছে, যার মধ্যে পুনর্গঠন প্রচেষ্টা এবং ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য একটি সুস্পষ্ট কাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব রয়েছে। আরব নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে আরও জোরালোভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ দেয়।

আরব দেশগুলির প্রস্তাবটি বলছে, যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর করতে, মানবিক সহায়তার জন্য একটি করিডোর স্থাপন করতে এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীকে গাজায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও, প্রস্তাবে গাজার মৌলিক অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদে তাদের ঘরে ফেরানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে স্থান পেয়েছে।

ওয়াশিংটনে, বাইডেন প্রশাসন ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছে যাতে সংকটের প্রতি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনও নাগরিক মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূল সমস্যা সমাধানে দুই রাষ্ট্র সমাধানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

আরব দেশগুলির প্রস্তাবটি ওয়াশিংটনে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে, যেখানে কিছু আইনপ্রণেতা ইসরায়েলকে আরও জোরালোভাবে চাপ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যরা আবার এমন একটি সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের পক্ষে বলছেন যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি সম্মান জানায়। এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলাফল অনিশ্চিত, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছে, কারণ উভয় পক্ষ এই সূক্ষ্ম আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

মাটিতে পরিস্থিতি চলমান থাকলেও, অনেকেই আশা করছেন যে এই আলোচনাগুলি এমন একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান তৈরি করবে যা গাজার জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সান্ত্বনা আনবে এবং অঞ্চলটির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। তবে, শতাব্দীর পুরানো সংঘাত এবং উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের কারণে, শান্তির পথে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে।

সাজিদ

×