
ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সব দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর বিরুদ্ধে এশিয়ার বড় অর্থনীতির দেশগুলো সতর্ক ও সংযত প্রতিক্রিয়া জানালেও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ করে উল্টো শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। খবর নিক্কেই এশিয়ার।
অস্ট্রেলিয়া এই সিদ্ধান্তকে হতাশাজনক বলে অভিহিত করেছে, যেখানে চীন ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর সমঝোতার জন্য আলোচনার উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটনে প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিউলের মতো কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোকে এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যা পারস্পরিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করে, দুর্বল নয়। এটি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ নয়। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন অস্ট্রেলিয়াকে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল, কিন্তু এবার সেই সুযোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ও আলবানিজের ফোনালাপে ট্রাম্প সম্ভাব্য ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও, শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, প্রেসিডেন্ট বিষয়টি বিবেচনা করেছেন ও ছাড় দেওয়ার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোনো দেশই ছাড় পাবে না। আমেরিকা ফার্স্ট নীতিতে উৎপাদনকারীরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে পণ্য উৎপাদন করে, তাহলেই সুবিধা মিলবে।
তবে আলবানিজ বলেন, এই শুল্কের সরাসরি প্রভাব অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির ওপর তেমন গুরুতর নয়, কারণ দেশটির মার্কিন বাজারে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানি মোট রপ্তানির শূন্য দশমিক ২ শতাংশেরও কম। জানা গেছে, ট্রাম্পের এই শুল্ক থেকে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করেছিল বিশ্বের চতুর্থ অর্থনীতির দেশ জাপান। কিন্তু তাদের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োজি মুটোর আলোচনার পরেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জরুরি বৈঠক করেছে ও মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার জন্য উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিক চেয়ং ইন-কিয়ো ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আস্থার ভিত্তিতে আলোচনা চালিয়ে যাব ও শিল্প খাতের ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এশিয়া যখন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে, তখন ইউরোপ সরাসরি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহত করবে, অনিশ্চয়তা বাড়াবে, কর্মসংস্থানের ক্ষতি করবে ও মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। ইইউ জানিয়েছে, আগামী মাস থেকে ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে। এটিতে তারা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী কিন্তু সুষম প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে বিবেচনা করছে।