
মস্কোতে ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবন
২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মস্কোর বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে অন্তত ৯১টি ড্রোন ছুড়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এতে অন্তত দুইজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলার জেরে বিভিন্ন স্থানে আগুন লেগে যায়। এছাড়া রাজধানী মস্কোর চারটিসহ মোট ৬টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি বহু ফ্লাইট অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার রাজধানীতে ইউক্রেন তাদের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মস্কোকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৯১টি ড্রোন হামলা চালানো হয়, যার ফলে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে আগুন লেগে যায়, বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং কয়েক ডজন ফ্লাইটের দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয় বলে রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার আকাশে মোট ৩৩৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯১টি মস্কো অঞ্চলে এবং ১২৬টি কুরস্ক অঞ্চলে ভূপাতিত করা হয়েছে। রাশিয়ার এই কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী পিছু হটছে।
তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার জন্য সৌদি আরবে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এবং রুশ বাহিনী পশ্চিম রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্যকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করার সময় মঙ্গলবার ভোরের দিকে বিশাল এই ড্রোন হামলাটি শুরু হয়। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শহরের ওপর আক্রমণ প্রতিহত করছে।
রাশিয়ার এই রাজধানী শহরের আশপাশের অঞ্চলের জনসংখ্যা কমপক্ষে ২.১ কোটি এবং এটি ইউরোপের বৃহত্তম মহানগর অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। সোবিয়ানিন টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, মস্কোর ওপর শত্রু বাহিনীর ইউএভির (মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যান) সবচেয়ে বড় আক্রমণ প্রতিহত করা হয়েছে। মস্কো অঞ্চলের গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোবিভ বলেছেন, হামলায় কমপক্ষে একজন নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
এছাড়া তিনি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত অ্যাপার্টমেন্টের ছবি পোস্ট করেছেন যার জানালা হামলার জেরে ভেঙে গেছে। ভোরোবিভ বলেন, মস্কো অঞ্চলের রামেনস্কয় জেলার একটি বহুতল ভবন থেকে কিছু বাসিন্দাকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এই অঞ্চলটি ক্রেমলিন থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। অবশ্য ইউক্রেনের এই হামলার পরও মস্কোতে আতঙ্কের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি এবং মস্কোর প্রাণকেন্দ্রের বাসিন্দা ও যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজ-কর্ম করছেন।
রাশিয়ার বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, হামলার পর বিমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মস্কোর চারটি বিমানবন্দরেই ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।