ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

ধ্বংসস্তুপের নিচে স্বজনদের খুঁজছেন গাজাবাসী

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ৯ মার্চ ২০২৫

ধ্বংসস্তুপের নিচে স্বজনদের খুঁজছেন গাজাবাসী

ছবি: সংগৃহীত।

আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহ গণহত্যার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে গাজা। টানা ১৫ মাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞে গোটা উপত্যকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা, আর চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হলেও তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই।

বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিরা হারানো স্বজনদের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তেমনই একজন জাবালিয়ার বাসিন্দা মাজদালাভি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে তার বাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। দুই মাস পর আবারও সেই বাড়িতে হামলা চালায় আইডিএফ, যেখানে প্রাণ হারান তার পরিবারের ১৭ জন সদস্য।

ইসরায়েলের নৃশংসতার কারণে গাজা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে, ধ্বংসস্তূপ সরানোর সরঞ্জামের অভাবে চাপা পড়া স্বজনদের উদ্ধারে পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। মাজদালাভি বলেন, "আমার পরিবারের ১৭ জনের মধ্যে ১১ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছি। আমার মায়ের মরদেহ তিন টুকরো করে বের করতে হয়েছে, তারপর কাফনে মুড়ে দাফন করেছি। এখনো আমার পরিবারের ছয়জন সদস্য ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।"

ধ্বংসস্তূপেই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। তার ভাষায়, "এখানেই আমার পরিবারের ছয়জনের মরদেহ পড়ে আছে। আমি এখানেই থাকছি। মাঝে মাঝে মনে হয়, ঘরের ছাদ আবার ধসে পড়বে।"

ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্স ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়াদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার যন্ত্রণা আরও বেড়েছে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা। ক্রমাগত বোমা হামলার পাশাপাশি ত্রাণ প্রবেশেও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর হার আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ত্রাণ সংগ্রহের দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করেও মিলছে না প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ। তীব্র খাদ্য সংকটে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে শিশু ও বৃদ্ধদের। এরই মধ্যে প্রকৃতিও যেন ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিরূপ—তীব্র শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাস্তুচ্যুত মানুষরা।

গাজার এই মানবিক বিপর্যয়ের অবসান কবে হবে, আদৌ হবে কি না—সে প্রশ্নই আজ বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।   

নুসরাত

×