
ফিনল্যান্ড,বিশ্বের অন্যতম সুখী দেশ। আর এই দেশেই একসময় ঘটে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হন সান্না মারিন,বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। নারীর ক্ষমতায়নের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন তিনি। তাকে ‘রূপকথার রানী’ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু এই সফলতার গল্প একদিনে শুরু হয়নি।
ফিনল্যান্ডের নারীরা বিশ্বে প্রথম ভোটাধিকার পান ১৯০৬ সালে। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকারও পান তাঁরা। এর ঠিক এক বছর পর, দেশটির ২০০ আসনের সংসদে ১৯ জন নারী এমপি নির্বাচিত হন। সময়ের পরিক্রমায় এই সংখ্যাটি বহুগুণে বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় সখানেক নারী সংসদ সদস্য আছেন ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্টে, যা নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
নারীরা শুধু সংসদেই নয়, কর্মক্ষেত্রেও পুরুষদের সমান তালে এগিয়ে চলেছেন। কিছু ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়েও বেশি অগ্রসর নারী কর্মী রয়েছেন ফিনল্যান্ডে। তবে এখানকার অধিকারকর্মীরা বলছেন, এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। বিশেষ করে নারীর মানসিক নির্যাতন প্রতিরোধে কঠোর আইন এখনো কার্যকর হয়নি।
নারী অধিকার ও অভিবাসী নারীদের উন্নয়নে কাজ করছেন প্রবাসী বাংলাদেশি একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি জানান, ফিনল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর আইন নেই।
তিনি বলেন, “অনেক অভিবাসী নারী আছেন, যারা সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার কারণে আইন ভালোভাবে বুঝতে পারেন না। মানসিক নির্যাতন চোখে দেখা যায় না, তাই একে প্রমাণ করাও কঠিন। ফলে, এই বিষয়ে আইন কার্যকর করাটা বেশ দুর্বল।”
নারী ক্ষমতায়নের এই অগ্রযাত্রায় এবার একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারীও অংশ নিতে চলেছেন। মানবাধিকারকর্মী কিঞ্চিত হৃদ্ধিমান এবার ফিনল্যান্ডের সিটি কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এটি বাংলাদেশিদের জন্য এক গর্বের বিষয়।
ফিনল্যান্ডের মতো একটি দেশ, যেখানে নারীরা রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেখানে একজন বাংলাদেশি নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
ফিনল্যান্ড প্রমাণ করেছে, নারীর ক্ষমতায়ন মানেই একটি দেশের সমৃদ্ধি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি ও অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করাই একটি উন্নত রাষ্ট্রের মূল চাবিকাঠি। এখন প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশ কি ফিনল্যান্ডের কাছ থেকে এই শিক্ষাটি গ্রহণ করবে?
সূত্র:https://tinyurl.com/bdexc4r9
আফরোজা