ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

ট্রাম্পের শুল্কনীতি, চরম সংকটে ভারত!

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ৬ মার্চ ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্কনীতি, চরম সংকটে ভারত!

ছবি: সংগৃহীত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে তার আগ্রাসী অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ভারতের শুল্কনীতি নিয়ে তার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ রয়েছে। প্রথম মেয়াদ থেকেই ট্রাম্প ভারতের উচ্চ শুল্ক আরোপের বিষয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানিয়ে আসছেন। এমনকি তিনি ভারতকে ‘ট্যারিফ কিং’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।

ট্রাম্পের অসন্তোষ চূড়ান্ত রূপ নেয় সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া তার ভাষণে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২ এপ্রিল থেকে ভারতের ক্ষেত্রেও পারস্পরিক শুল্কনীতি কার্যকর হবে। এর অর্থ, ভারত যদি কোনো মার্কিন পণ্যের ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও ভারতীয় পণ্যের ওপর একই হারে শুল্ক বসাবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বদলাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাজেশ আগারওয়ালকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান। তাদের লক্ষ্য ছিল ট্রাম্প প্রশাসনকে বোঝানো যে, ভারত বাণিজ্য চুক্তিতে আগ্রহী এবং তাই দেশটিকে এই নতুন শুল্কনীতির আওতার বাইরে রাখা উচিত। তবে এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন যে, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়ে রেখেছে। তিনি বিশেষভাবে হার্লি ডেভিডসন মোটরবাইকের ওপর ভারতের ১০০% আমদানি শুল্ক আরোপের বিষয়টি প্রায় প্রতিটি ভাষণে উল্লেখ করেছেন। যদিও সম্পর্ক সুসংহত করতে ভারত মোটরবাইক ও হুইস্কির শুল্ক কমিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং প্রতিরক্ষা খাতে মার্কিন অস্ত্র কেনার চুক্তিও করেছে, তবুও ট্রাম্পের মন গলানো যায়নি।

শুধু ভারত নয়, ট্রাম্পের ভাষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ব্রাজিল, মেক্সিকো ও কানাডার কথাও উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, এই দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে আসছে, এবার আমেরিকাও একইভাবে জবাব দেবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের সামনে চরম দোটানা তৈরি হয়েছে। একদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার, অন্যদিকে ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য বড় হুমকি। বিশেষ করে প্রযুক্তি, পোশাক, ওষুধ, গয়না ও কৃষি পণ্য খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এটি শুধু বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, বরং এর মধ্যে একটি রাজনৈতিক বার্তাও রয়েছে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের স্বাধীন বাণিজ্যনীতি মেনে নেবে না। তিনি বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পুরনো নীতি নয়, বরং 'আমেরিকা ফার্স্ট' এজেন্ডা চালু থাকবে।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=VCF6d6c9C1A&t=199s

সায়মা ইসলাম

×