
ছবিঃ সংগৃহীত
দীর্ঘ ২৪ বছর কারাগারের অন্ধকারে কাটানোর পর অবশেষে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিলেন ফিলিস্তিনি নাগরিক হামেদ আল জারো। গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে তিনি পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত মুক্তি। দুই যুগ পর পরিবারের সঙ্গে বসে পবিত্র রমজানে প্রথমবারের মতো ইফতার করেছেন তিনি।
পরিবারের সান্নিধ্য, সন্তানের স্নেহ, আর স্বাধীনতার স্বাদ—সবকিছুই ফিরে পেয়েছেন আল জারো। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তিনি বললেন, "ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলাম। কবে প্রিয় ফিলিস্তিনি খাবার মাকলুবা খাব, কবে স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনিদের নিয়ে এক দস্তরখানে বসবো—এটাই ছিল আমার চাওয়া।"
২০০২ সালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে আটক হন হামেদ আল জারো। তাকে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দুই যুগ পর বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান।
কারাগারে থাকলেও তিনি মুক্তির আশা ছাড়েননি। তিনি বলেন, "আমরা জনগণের ব্যাপারে হাল ছাড়িনি, স্বাধীনতা আমাদের অধিকার। বিশ্বাস ছিল, একদিন আমরা মুক্তি পাবো এবং পরিবারের কাছে ফিরতে পারবো। আল্লাহর অশেষ রহমতে আজ আমি স্বাধীন।"
বন্দি জীবনেও তিনি সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী খাবার মাকলুবা খেতেন। তাই মুক্তির পর রমজানের প্রথম দিন পরিবারের সঙ্গে ইফতারে সেই খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তার বাড়িতে ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, নাতিনাতনিসহ ৭০ জনেরও বেশি স্বজন একত্রিত হয়।
আল জারো বলেন, "স্বাধীনতার মতো সুন্দর আর কিছু নেই। বন্দি অবস্থায় ইফতার করলে কারা-রক্ষীরা এসে গণনা করতো, সবসময় এক অজানা ভয়ের মধ্যে থাকতে হতো। কিন্তু এখন ইচ্ছেমতো খেতে পারছি, কারও বিধিনিষেধ নেই, কোনো শঙ্কা নেই। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি।"
গাজার ওপর ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও ১৫ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন লক্ষাধিক। গোটা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে এবারের রমজানে হামেদ আল জারোর মতো বহু ফিলিস্তিনি ফিরে পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত মুক্তি।
ইমরান