
ছবিঃ সংগৃহীত
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, জনপ্রিয় স্ন্যাপচ্যাট এবং টিকটক, অস্ট্রেলিয়ার শিশু সুরক্ষা আইনে নিষেধাজ্ঞা থেকে ইউটিউবকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সংসদ গত নভেম্বর মাসে বিশ্বের অন্যতম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোকে বিধিনিষেধ অনুমোদন করে। এই আইন অনুযায়ী, ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এসব প্ল্যাটফর্মে লগ-ইন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ এই বিধিনিষেধ ভঙ্গ করলে ৪৯.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
কেন ইউটিউবের জন্য ছাড়?
এ বছরের শেষ নাগাদ কার্যকর হতে যাওয়া এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ইউটিউবকে ছাড় দেওয়া হয়েছে, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইউটিউবই একমাত্র প্ল্যাটফর্ম, যা পারিবারিক অ্যাকাউন্টের অংশ হিসেবে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে শিশুদের ব্যবহারের অনুমতি পাচ্ছে।
প্রতিযোগীদের আপত্তি
তবে, অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো ইউটিউবের এই বিশেষ সুবিধার বিরোধিতা করেছে।
মেটা বলেছে, ইউটিউব ব্যবহারকারীরা সেই একই ফিচার ব্যবহার করে, যা নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হিসেবে সরকার উল্লেখ করেছে—যেমন অ্যালগরিদম-ভিত্তিক কনটেন্ট সাজেশন, সামাজিক যোগাযোগ ফিচার এবং ক্ষতিকর কনটেন্টের সম্ভাব্যতা।
এক ব্লগ পোস্টে মেটা জানায়,
"ইউটিউবের এই ছাড় আইনের মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী, তাই আমরা সরকারের কাছে সব সামাজিক মাধ্যমের জন্য সমান নিয়ম প্রয়োগের দাবি জানাচ্ছি।"
টিকটক মনে করে, ইউটিউবকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেওয়া হলে তা “অলৌকিক, প্রতিযোগিতাবিরোধী এবং স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন” হবে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে যেন সব সামাজিক মাধ্যমের জন্য একীভূত নীতি প্রয়োগ করা হয়।
স্ন্যাপচ্যাট-ও বলেছে,
"কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া উচিত নয়। সব প্ল্যাটফর্মের জন্য একই নিয়ম থাকা উচিত।"
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
কিছু মানসিক স্বাস্থ্য এবং প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইউটিউবেও এমন অনেক আসক্তিকর ও ক্ষতিকর কনটেন্ট রয়েছে, যা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতোই বিপজ্জনক।
ইউটিউবের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা কনটেন্ট পর্যবেক্ষণের কঠোরতা বাড়াচ্ছে এবং স্বয়ংক্রিয় সনাক্তকরণ প্রযুক্তি দ্বারা ক্ষতিকর কনটেন্ট শনাক্তকরণের পরিধি প্রসারিত করেছে।
কী হবে এখন?
বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর আপত্তির পর, অস্ট্রেলিয়ার সরকার ইউটিউবের এই বিশেষ সুবিধার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সূত্রঃ রয়টার্স
ইমরান