ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১

দিল্লির কারসাজিতে এসব সংঘর্ষ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মাঝে?

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২০:৪৩, ৪ মার্চ ২০২৫

দিল্লির কারসাজিতে এসব সংঘর্ষ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মাঝে?

ছবি: সংগৃহীত

আরেকটা যুদ্ধ, আরেকটা ধুন্ধুমার উত্তেজনা। সারি সারি বন্দুক তাক করা, ট্রিগার চাপা হচ্ছে সমান তালে। সীমান্তের এপার ওপার তোলপার গুলির আওয়াজে। তবে বাধছে কি নতুন যুদ্ধের ডঙ্কা।

দক্ষিণ এশিয়ায় আবারো জ্বলবে অশান্তির আগুন, সে প্রশ্নগুলো উঠছে। আবার সীমান্তে সংঘাতে জড়িয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। একসময়কার মিত্র দুই দেশ দিনে দিনে বৈরিতার চরমে পৌঁছাচ্ছে, এর পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে কে? অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষকই দিল্লির দিকে আঙ্গুল তুলছেন। তারা মনে করছেন সাম্প্রতিক তালেবান-দিল্লি দহরম মহরম প্রমাণ করে এই অঞ্চলে আলাদা কিছু ঘটছে। তালেবানের ট্রিগারে হাত রেখে পাকিস্তানের দিকে মূলত গুলিটা ছুড়ছে ভারতই।

সোমবার নতুন উত্তেজনার খবর এসেছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং এ উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। উভয় দেশের বাহিনীর মধ্যে রাতভর চলেছে গোলাগুলি। এতে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

কাবুলের সীমান্ত চৌকি নির্মাণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসলামাবাদ। এরপর পাকিস্তান ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশ এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাক্কতন খোঁয়া প্রদেশে অবস্থিত তোরখাম সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। সেখান থেকেই মূলত এই উত্তেজনা শুরু।

আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি জানিয়েছেন রবিবার রাতে সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হয় এবং সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত চলে। তোরখাম সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় চালু করার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে। ফলে ফল ও শাকসবজিসহ পণ্যবাহী হাজার হাজার ট্রাক এবং যানবাহন আটকা পড়েছে।

কানি বলেন পাকিস্তানি বাহিনী প্রথম গুলি চালায় এবং এই ঘটনায় কমপক্ষে একজন তালেবান কর্মকর্তা নিহত এবং আরো দুইজন আহত হয়। সীমান্ত ক্রসিং এর কাছে বাসিন্দারা জানিয়েছেন পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে। সংঘাতের পর আরো গুলিবর্ষণ হতে পারে বলে তারা উদ্বিগ্ন।

আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে বছরের পর বছর ধরে গুলিবর্ষণ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অতীতে উভয়পক্ষই বিভিন্ন কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের তোরখাম এবং চামান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের জন্য দুটি ক্রসিং, ব্যবসা এবং ভ্রমণ উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং গাহিজ রাইটার্স এন্ড জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আহমেদ জিয়া রহিম জাই বলেছেন প্রাথমিক সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া পাকিস্তানের জন্য আফগানিস্তানের উপর চাপ বজায় রাখার একটি কৌশল। তিনি বলেছেন মাঝে মাঝে তারা অজুহাত খুঁজে দুই দেশের মধ্যে পথ বন্ধ করে দেয়, সীমান্তে সামরিক সংঘর্ষের পথ তৈরি করে। পাকিস্তানের লক্ষ্য হলো এই ধরনের চাপের মাধ্যমে আফগান শাসকদের তাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করা। তবে অন্য অনেক বিশ্লেষক এর পেছনে তৃতীয় হাত দেখছেন যারা আফগান-পাকিস্তানের প্রচলিত সম্পর্কে পেরেক ঠুকতে চায়।

আবীর

×