
ছবিঃ সংগৃহীত
পাকিস্তান এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তুরখাম সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত একজন আফগান নিরাপত্তা কর্মী নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত রাতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যখন পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান নিজেদের মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে তর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। তুরখাম সীমান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট, যেটি পাকিস্তান গত মাসে বন্ধ করে দেয় আফগানিস্তান দ্বারা নতুন সীমান্ত পোষ্ট নির্মাণের কারণে।
পাকিস্তানের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানিয়েছেন যে পাকিস্তানি বাহিনীও সংঘর্ষে আহত হয়েছে। আফগান কর্মকর্তারা পাকিস্তানকে সংঘর্ষের জন্য দায়ী করেছে, যেখানে পাকিস্তান দাবি করছে, তালিবানরা তাদের সীমান্ত চৌকির দিকে অপ্রত্যাশিতভাবে গুলি চালিয়েছিল।
এই সংঘর্ষের সময় ইসলামিক পবিত্র রমজান মাসের প্রথম কর্মদিবস ছিল, যখন পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে খাদ্যপণ্যের আমদানি তীব্র হয়। এর ফলে, তুরখাম সীমান্তে প্রায় ৫,০০০ ট্রাক আটকে পড়েছে, যা আফগানিস্তানে জরুরি পণ্যের সরবরাহে বিশাল বাধা সৃষ্টি করেছে, এবং শীতকালীন কঠিন অবস্থায় ট্রাকগুলো আটকে পড়ে।
এ ঘটনায় আফগান অর্থনীতির ওপর আরও চাপ পড়তে পারে, যা ইতিমধ্যে গভীর সঙ্কটে রয়েছে। জাতিসংঘ জানায়, আফগানিস্তানের অর্ধেকেরও বেশি জনগণ মানবিক সহায়তার জন্য নির্ভরশীল, এবং দেশটির বিশাল জনগণ ক্ষুধার্ত।
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান পূর্বেও তুরখাম এবং চামান সীমান্ত বন্ধ করেছিল, যেখানে অতীতে গুলির লড়াই বা গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
আফগান মন্ত্রীর মুখপাত্র আব্দুল মাতিন কানি জানিয়েছেন, পাকিস্তানই প্রথম হামলা চালিয়েছে, আর এর পর আফগান বাহিনী "রক্ষাকর্মী" হিসেবে প্রতিরোধ করেছে।
তুরখাম সীমান্ত বন্ধ হওয়ার ফলে পাকিস্তানের জন্য ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ১৫ মিলিয়ন ডলার পৌঁছেছে, এবং আফগান ব্যবসায়ী ও বাণিজ্যিক নেতারা প্রতিদিন ৫০০,০০০ ডলারের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ২০২৪ সালে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ছিল ১.৬ বিলিয়ন ডলার।
এই সংঘর্ষের পেছনে বেশ কিছু কূটনৈতিক সমস্যাও রয়েছে, যার ফলে দুটি দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.aljazeera.com/news/2025/3/3/pakistani-and-afghan-forces-clash-at-vital-border-crossing
মারিয়া