
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চার দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইউক্রেন সংকট নিরসনে লন্ডনের ল্যাংস্টার হাউসে ইউরোপের ১৮টি দেশের নেতারা এক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হন। সম্মেলনে চারটি বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে মতৈক্য প্রকাশ করেছে ইউরোপ বলে জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করা, স্থায়ী শান্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যে কোনো শান্তি আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনকে শামিল রাখা। খবর বিবিসির।
কিয়ার স্টারমার আরও জানান, ভবিষ্যতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে ইউরোপের নেতাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে কিয়েভের সুরক্ষার জন্য একটি জোট গঠন করতে হবে এবং দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি পাউন্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যের দেওয়া এই অর্থ খরচ করে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে। সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, আজ আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। তিনি বলেন- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশ মিলে একটি ইচ্ছুকদের জোট গঠন করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এই সমর্থনে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করা হবে। সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন শক্তিশালী সমর্থন অনুভব করছে এবং এই সম্মেলন ইউরোপের অভূতপূর্ব সংহতি প্রকাশ করছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি করতে ইউক্রেন প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। লন্ডনে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি। এর আগে রবিবার লন্ডনের ল্যাংস্টার হাউজে ইউক্রেন সংকট নিয়ে জেলেনস্কির পাশাপাশি সম্মেলনে যোগ দেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জোটের নেতারা। সম্মেলন শেষে বিবিসির মুখোমুখি হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটনের সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে কিয়েভ প্রস্তুত বলে জানান তিনি। জেলেনস্কি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। আমি সত্যিই মনে করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও প্রস্তুত থাকবে। হয়তো কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করার জন্য তাদের সময় প্রয়োজন। গেল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠককালীন বাগবিতণ্ডার জেরে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। বাতিল করা হয় দুই প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলন। এদিকে লন্ডনের সম্মেলনে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে বলে জানিছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন। সম্মেলনে চারটি বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে মতৈক্য প্রকাশ করেছে ইউরোপ বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করা, স্থায়ী শান্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যে কোনো শান্তি আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনকে শামিল রাখা।