
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার হুমকি দেয়ার পর থেকেই দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে। কানাডার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সবার কাছেই শিকারী ও দখলদার মানসিকতার একটি দেশে পরিণত হয়েছে এতদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় এই দখলদারকে মোকাবেলায় পরমাণু সুরক্ষা তৈরির তাগিদ অনুভব করছেন কেউ কেউ।
প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী জোট গড়ে তুলবে কানাডা? প্রয়োজনে তাই। তেমনটাই বলছেন দেশটির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও আগামীতে প্রধানমন্ত্রীত্ব প্রত্যাশী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।
এ সপ্তাহে দলীয় নেতৃত্ব নির্ধারণী বিতর্কে অংশ নিয়ে এই অভিমত ব্যক্ত করেন লিবারেল পার্টির প্রভাবশালী এ রাজনীতিবিদ। ট্রাম্পের কানাডা দখলে নিতে চাওয়ার ঘোষণাকে সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি উল্লেখ করে সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন অটোয়ার জন্য জরুরি হলো ইউরোপের মিত্রদের মাধ্যমে পারমাণবিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্সের মত দেশগুলোর সাথে জোটবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
ট্রাম্প সুস্পষ্টভাবে আমাদের সার্বভৌমত্বকে হুমকি দিচ্ছেন এবং আমাদের অবশ্যই এর প্রতিক্রিয়া জানানো দরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আইন ও শৃঙ্খলা উপেক্ষা করে শিকারী রূপে হাজির হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ইউরোপের দেশগুলোকে একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় ন্যাটো জোটেও ভাঙ্গন সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এছাড়া ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রীনল্যান্ড কিনে নেয়ারও হুমকি দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর সাথে সামরিক সম্পর্ক গভীর করার জন্য এটি যথাযথ সময় বলে মনে করছেন ফ্রিল্যান্ড।
তিনি আরও বলেন, "এই মুহূর্তে কানাডার জন্য যেটা দরকার সেটা হলো গণতান্ত্রিক ও সামরিক মিত্রদের সাথে আরো গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়া। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলাম, ফলে আমার ভালো করেই জানা আছে কিভাবে তা করতে হবে। আমি নর্ডিক মিত্র, বিশেষ করে ট্রাম্পের হুমকি পাওয়া ডেনমার্ক এবং ইউরোপ ও ন্যাটো মিত্রদের সাথে সামরিক সম্পর্ক বাড়াতে পদক্ষেপ নেব। আমি নিশ্চিত ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যকে আমরা পাশে পাবো। তাদের আছে পারমাণবিক অস্ত্র। এ মিত্রদের সাথে সামরিক ও নিরাপত্তাজনিত সম্পর্ক গভীর করতে অভিলম্বে কাজ শুরু করতে আগ্রহী আমি। যাতে যুক্তরাষ্ট্র যখনই হুমকি হয়ে উঠবে তখনই কানাডার সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।"
ট্রাম্পের শাসনাধীন যুক্তরাষ্ট্রকে কানাডার নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি উল্লেখ করে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী এই নেতা আরো বলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ট্রাম্পের হুমকিকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন না। উদ্ভূত বাস্তবতায় কানাডার পররাষ্ট্রনীতিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পক্ষপাতি তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন দীর্ঘকালের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্ক যে দিন দিন তিক্ত থেকে তিক্ততর হচ্ছে ফ্রিল্যান্ডের এই অবস্থান তারই বার্তা বহন করছে। এটি উদ্বেগজনক। ট্রাম্পের দখলদারী মানসিকতার ফলে কানাডিয়ানদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ভাবাদর্শ ক্রমশই প্রবল হয়ে উঠছে।
আবীর