
ছবি: সংগৃহীত
দোহার ১,৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীর জন্য এবারের রমজান আনন্দের নয়; বরং তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় থাকা পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থাকার যন্ত্রণা নিয়েই কাটছে এই পবিত্র মাস। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা ছাড়তে বাধ্য হয় এই মানুষগুলো। তাদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন গুরুতর আহত।
১৬ বছরের হায়া আল-বারাই ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দোহায় পৌঁছান, ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার বাবা-মাকে হারানোর পর। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে এখন তিনি পঙ্গু। তার ভাইবোনদের কেউ তুরস্কে, আবার কেউ এখনো গাজায় আটকে আছে। হায়া বলেন, “আমি এখানে রমজান পালন করতে চাই না। আমার পরিবারের সঙ্গে কাটানো সেই রমজানের দিনগুলোকে খুব মিস করি।”
বিভিন্ন পরিবারে এই বিচ্ছেদের কষ্ট আরও গভীর। ১২ বছরের হামসা আল-রাকপ এক ইসরায়েলি হামলায় তার বাঁ চোখ হারায় এবং ডান হাত ভেঙে যায়। তার বাবা মাহের আল-রাকপ সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকেন গাজায় রয়ে যাওয়া তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জন্য। তিনি বলেন, “গত বছর যখন হত্যা-নির্যাতন চলছিল, আমরা রমজানের জন্য কিছুই করতে পারিনি। এবারের রমজানও তার ব্যতিক্রম নয়।”
ইসরায়েলের হামলায় ইতোমধ্যে ৩৮,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু অনাথ হয়েছে, আর অসংখ্য মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। দোহায় আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের বেশিরভাগই এখন শহরের উপকণ্ঠে একটি ক্যাম্পে বসবাস করছে। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও প্রিয়জনদের অনুপস্থিতি রমজানের আনন্দ ম্লান করে দিচ্ছে।
আল-হাও ও আবু আল-রস পরিবারের মতো অনেকেই প্রিয়জনদের হারানোর শোক বয়ে বেড়াচ্ছে। তারা দিন গুনছে কবে আবার গাজার মাটিতে ফিরে প্রিয়জনদের কাছে যেতে পারবে। এই আশাতেই তাদের ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে চলতে হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা
আবীর