
মধ্যরাতে পাকিস্তানের দুর্গম এক অঞ্চলে আকস্মিকভাবে আকাশে জ্বলে ওঠে আলো, প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। পরে জানা যায়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সফলভাবে পরীক্ষা চালিয়েছে ফাতা-টু ব্যালিস্টিক মিসাইলের। স্বল্পপাল্লার এই মিসাইল একদিকে যেমন পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে, তেমনি উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
ফাতা-টু মিসাইল: প্রযুক্তিগত সক্ষমতা
নতুন ফাতা-টু মিসাইলের রেঞ্জ ৪০০ কিলোমিটার, যেখানে এর আগের সংস্করণ ফাতা-ওয়ান মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারত। পাক কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি একটি গাইডেড মিসাইল, যা স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত। মিসাইলটি ওড়ার সময় গতিপথ অনন্য হওয়ায় এটি শনাক্ত করাই কঠিন, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমেও ধরা পড়বে না।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাশিয়া থেকে পাওয়া ভারতের ট্রিয়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমও ফাতা-টু মিসাইল শনাক্ত করতে পারবে না। এই মিসাইলের লক্ষ্য বিচ্যুতি অত্যন্ত কম, যা এটিকে আরও মারাত্মক করে তুলেছে।
ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ফাটা-টু পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এটি শত্রুপক্ষের সামরিক স্থাপনার গভীরে প্রবেশ করে সেতু, সামরিক ঘাঁটি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কন্ট্রোল সেন্টার ধ্বংস করতে পারে। আধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সুরক্ষার মধ্যেও এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
বিশ্লেষকদের মতে, একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট সিস্টেম এবং আত্মঘাতী ড্রোনের সঙ্গে একযোগে ফাতা-টু উৎক্ষেপণ করলে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। মোবাইল লঞ্চারের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হলে শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমেও এটি শনাক্ত করা কঠিন হবে।
পাক-ভারত সামরিক প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হচ্ছে
২০২৩ সালে পাকিস্তান ফাতা-টু রকেট লঞ্চিং সিস্টেম উন্মোচন করে, যা কম খরচে মিসাইল ও রকেট উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম। এর ফলে পাকিস্তান সামরিক শক্তি আরও বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে, যা ভারতকে কৌশলগতভাবে চাপে ফেলতে পারে।
ভারত ২০০৪ সালে 'কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন' ঘোষণা করার পর থেকেই পাকিস্তান অপ্রত্যাশিত সামরিক হামলার আতঙ্কে রয়েছে। এর ফলে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে সামরিক প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
ফাতা-টু মিসাইলের সফল পরীক্ষা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।
সূত্র ঃhttps://www.youtube.com/watch?v=PD4jybktgqs
রাজু