ভলোদিমির জেলেনস্কি, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন
ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনা ফের বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রবেশের বিনিময়ে ক্ষমতা ছাড়তে প্রস্তুত বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রাত প্রস্তাব দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবস্থান স্পষ্ট করা হলো।
এখনই ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের তৃতীয় বার্ষিকীতে জাতিসংঘে ভোটে দুবার রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান পরিবর্তনকে তুলে ধরে। খবর আরটির।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মস্কোর আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখ-তাকে সমর্থন করে ইউরোপীয় খসড়া প্রস্তাব দেওয়া হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এর বিরোধিতা করে। যদিও প্রস্তাবটি পাস হয়েছিল। এরপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন খসড়া প্রস্তাবটি দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে রাশিয়ার কোনো সমালোচনা করা হয়নি।
এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ওয়াশিংটন ও মস্কো। তবে প্রস্তাবটি পাস হলেও যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স শব্দ সংশোধনের আহ্বান জানান। তাতে ভেটো না দিলেও তারা ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এ সময় দুই নেতার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ফুটে উঠলেও ইউক্রেন ইস্যুতে তীব্র মতপার্থক্য দেখা যায়।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন ট্রাম্প-ম্যাক্রোঁ। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারও নতুন মার্কিন নেতার সঙ্গে দেখা করবেন। ওয়াশিংটনের এই অবস্থান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ট্রান্স আটলান্টিক সামরিক জোট ন্যাটোকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পাশাপাশি ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি অঙ্গীকার নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মার্কিন কূটনীতিকরা রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সময় প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ইউরোপীয় প্রস্তাবটিকে ৯৩ ভোটে অনুমোদন করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এতে বিরত না থেকে সরাসরি এর বিপক্ষে ভোট দেয়। এছাড়া রাশিয়া, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, সুদান, বেলারুশ, হাঙ্গেরি এবং আরও ১১টি রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ৬৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। সাধারণ পরিষদে মার্কিন প্রস্তাবটিও পাস হয়।
যখন ইউক্রেনকে সমর্থন করে ভাষা সংশোধন করা হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভোটদান থেকে বিরত থাকে। অন্যদিকে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অসংশোধিত মার্কিন প্রস্তাবটি ১০ ভোটে গৃহীত হয়। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে প্রবেশের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
