ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

তালেবান শাসনের তিন বছর: কেমন আছে আফগানিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

তালেবান শাসনের তিন বছর: কেমন আছে আফগানিস্তান

২০২১ সালের ১৫ই আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এর ফলে ক্ষমতা সরাসরি চলে যায় বিদ্রোহী গ্রুপ তালেবানদের হাতে। নিজেদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ইসলামি শাসনব্যবস্থায় দেশ চালানোর পদক্ষেপ নেয় তালেবান সরকার, একইসাথে নিজেদের বৈধতা আদায়ের জন্য সব ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করে চলেছে তারা।

 

বিশ্বের কোন দেশ থেকেই এখনো বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি তালেবানরা। তবে চীন ও রাশিয়া সহ আঞ্চলিক বড় বড় শক্তিগুলোর সাথে নিয়মিত বৈঠক আয়োজন করা হচ্ছে। এমনকি জাতিসংঘের আয়োজিত বিভিন্ন বৈঠকেও অংশগ্রহণ করেছেন দলটির প্রতিনিধিরা। তবে আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্বেও নাগরিক সমাজের কোন প্রতিনিধি বা নারীদের কাউকে রাখা হয়নি এসব বৈঠকে। 

এছাড়াও, আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পেলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের সাথে নিয়মিতই অর্থনৈতিক লেনদেন চলছে।

তবে তালেবান শাসনের ফলে বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি। ব্যাংকিং ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে ভুগছে ব্যাংকগুলো, দিতে পারছে না কোন ঋণ। বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভর করেই চলছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি, যদিও অভিযোগ রয়েছে যে সে টাকা দেশের উন্নয়নে কমই ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আফিম চাষ হওয়া দেশটিতে বর্তমানে আফিম নিষিদ্ধ হবার কারণে এর খারাপ প্রভাব সরাসরি অর্থনীতির উপর পড়েছে। তবে ডালিম চাষ ও জুস উৎপাদনের মাধ্যমে এ সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে আফগানিস্তান।

 

তালেবান শাসনব্যবস্থায় সবধরনের সিদ্ধান্ত সবসময় ধর্মীয় নেতারাই নিয়ে থাকেন, প্রশাসন কেবল তা বাস্তবায়ন করেন। বর্তমানে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিবায়াতুল্লাহ আখুন্দজাদা বেশ কট্টর এসব ব্যাপারে, এবং তার জীবদ্দশায় এগুলো পরিবর্তন হবার কোন সুযোগ নেই, কারণ ধর্মীয় নেতা আমৃত্যু পদে বহাল থাকেন। 

 

মানবাধিকার ও নারী অধিকারে আফগানিস্তান সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে পড়েছে। নারীদের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়া এবং সব রকমের কর্মক্ষেত্র থেকে তাদের বরখাস্ত করার প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। তাদের পোশাক ও ভ্রমণেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বেশিরভাগ গণমাধ্যমই বন্ধ করে দেয়া বয়েছে, শুধু মূলধারার কিছু গণমাধ্যমকে।কাজ করতে দেয়া হয়। বেকারত্ব সমস্যা ও স্বাধীনতার অভাবে অনেকেই দেশ ছাড়ছেন।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও খুব একটা আশা জাগাতে পারেনি তালেবান সরকার। নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর সহিংসতার হার বেড়েই চলেছে। শিয়া সম্প্রদায়ের উপর প্রায় নিয়মিতই বোমা হামলা চালাচ্ছে আইসিস, যার কোনকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তালেবান সরকার। তবে মূলধারার গণমাধ্যমে এগুলোর প্রায় কিছু প্রকাশ করা হয় না। সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিরাপদ থাকার দাবি করা হলেও প্রায় সবদিকেই হোঁচট খাচ্ছে তালেবান সরকার।

×