
ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীর সীমান্তের ওপারে যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতিতে অবস্থান করছে, তখন ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে চলছে দমন-পীড়ন ও নির্বিচারে গুলি। ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নিহত হয়েছেন আরও এক তরুণ মুসলিম, মাখান দিন।
কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলায় একটি খালি মসজিদের ভেতর মাথায় টুপি ও নীল-সাদা স্পোর্টস জ্যাকেট পরা অবস্থায় নিজের শেষ ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন ২৫ বছর বয়সী মাখান দিন। সেখানে তিনি বলেন, তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করছেন যেন আর কেউ পুলিশের নিপীড়নের শিকার না হন। তবে পুলিশ দাবি করেছে, তার সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
শুধু মাখান দিন নয়, সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরের নানা প্রান্তেই বাড়ছে উত্তেজনা। বিতর্কিত এই অঞ্চলে ভারতীয় পুলিশের অভিযানে বেশ কয়েকটি বইয়ের দোকানে তল্লাশি চালানো হয় এবং ইসলামি পণ্ডিতদের শত শত বই জব্দ করা হয়। পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারের জন্য এসব বই গোপনে বিক্রি ও বিতরণ করা হচ্ছিল।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই কাশ্মীরের মালিকানা দাবি করে আসছে। এই অঞ্চলের স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কয়েক দশক ধরে সংঘর্ষ চলছে, যেখানে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার কাশ্মীরের জামায়াতে ইসলামীর শাখাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই অঞ্চলে দমনমূলক কার্যক্রম আরও বেড়েছে।
সম্প্রতি, শ্রীনগরের ঐতিহাসিক ৬০০ বছরের পুরনো জামিয়া মসজিদে নিরাপত্তার অজুহাতে টানা ছয় বছর ধরে মুসল্লিদের শবে বরাতের নামাজ আদায় করতে দেওয়া হয়নি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে কাশ্মীরের জনগণকে ভয় দেখানোর ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে উঠছে, আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই অঞ্চলের দিকেই।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/n--VNEom7bk?si=sFaF-pwk6X3pgnC_
এম.কে.