
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন একটি দল এক মার্কিন সংস্থার বৈদেশিক সহায়তা প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা বন্ধ ঘোষণার পর ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র এই দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এ বিষয়ে বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টিকে অভিযুক্ত করে বলেছে তারা এই সহায়তা চেয়েছে। বিজেপি একে নির্বাচনে ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছে। তবে কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং ট্রাম্পের দাবি ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি বিবৃতিতে এই ঘটনাকে গভীরভাবে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছন, “এখনই বিষয়টি সম্পর্কে জনসমক্ষে মন্তব্য করা অনুচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।”
ট্রাম্পের মার্কিন অর্থনীতি উন্নত করার অঙ্গীকার নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর, তিনি ইলন মাস্কের নেতৃত্বে সরকারি দক্ষতা বিভাগ- ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ (ডিওজি) তৈরি করেন যার লক্ষ্য ফেডারেল ব্যয় কমানো এবং সংশ্লিষ্ট কর্মী ছাঁটাই।
ডিওজির সবচেয়ে বড় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ছিল ইউএসএইডের এর ওপর কঠোর হস্তক্ষেপ। এছাড়া, এই বিভাগের করা কিছু কাটছাঁটের মধ্যে ছিল ‘কনসোর্টিয়াম ফর ইলেকশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেন্থেনিং’ অর্থাৎ নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সহায়তা প্রকল্প। এর জন্য ৪৮৬ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ভারতের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার ছিল।
ডিওজির এই কাটছাঁটের সমর্থনে ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, ভারতের কাছে অনেক টাকা আছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কর আরোপকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। গেলো বৃহস্পতিবার তিনি ভারতের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ব্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মিয়ামিতে এক সম্মেলনে ট্রাম্প বলন, “আমি মনে করি তারা (পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন) হয়তো কাউকে ‘অন্যভাবে’ নির্বাচিত করতে চেয়েছিল। ভারত সরকারকে আমাদের এটি জানিয়ে দিতে হবে।”
বিজেপির নেতা অমিত মালভিয়া রাহুল গান্ধীর একটি ভাষণের ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, “রাহুল গান্ধী লন্ডনে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপ পর্যন্ত বিদেশী শক্তিগুলোকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছিলেন।”
এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির শাসনামলে ইউএসএইড কর্তৃক সরকারি ও বেসিরকারি প্রতিষ্ঠানে দেওয়া সহায়তার ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রদান করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন।
এমটি