ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

ইরানের সামরিক মহড়া: শক্তি প্রদর্শন নাকি যুদ্ধের প্রস্তুতি?

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৮:২৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইরানের সামরিক মহড়া: শক্তি প্রদর্শন নাকি যুদ্ধের প্রস্তুতি?

রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আকাশে ধেয়ে যাচ্ছে ড্রোনের গর্জন, সাবেরিয়ার মরুপ্রান্তরজুড়ে দাউ দাউ করে জ্বলছে মিসাইলের আগুন। দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে শুরু হয়েছে দেশটির ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম সামরিক মহড়া “গ্রেট প্রফেট ১৯”

এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান তাদের সামরিক সক্ষমতার সর্বোচ্চ চিত্র তুলে ধরতে চাইছে। আধুনিক যুদ্ধকৌশল, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, ড্রোন হামলা, আর্টিলারি শেলিং ও সাজোয়া বহরের মুভমেন্ট—সব মিলিয়ে এক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ পরিস্থিতির অনুশীলন করছে দেশটি। ইরানের দাবি, এই মহড়ার লক্ষ্য প্রতিরক্ষামূলক সক্ষমতা বাড়ানো। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই মহড়ার মাধ্যমে তেহরান তার প্রতিপক্ষদের স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে— “আমরা প্রস্তুত।”পূর্ববর্তী মহড়া ও সামরিক পরিকল্পনা

এর আগেও ইরান একাধিকবার বড় ধরনের সামরিক অনুশীলন চালিয়েছে। কিছুদিন আগেই সালাসে বাবাজানি কাউন্ট্রির ইসগেলে এলাকায় বিশাল সামরিক ড্রিল পরিচালিত হয়, যেখানে মূলত প্রতিরক্ষা কৌশল ও অস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। তবে “গ্রেট প্রফেট” সিরিজের মহড়াগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো সরাসরি ইরানের সামরিক পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই মহড়া নতুন মাত্রা যোগ করেছে।ইরানের বার্তা কী?

বিশ্লেষকদের মতে, এই মহড়া শুধু অভ্যন্তরীণ সামরিক প্রস্তুতির অংশ নয়, বরং এটি কৌশলগত বার্তাও বহন করে:

সামরিক শক্তির আধুনিকীকরণ: ইরান বোঝাতে চাইছে, তাদের প্রতিরক্ষা শক্তি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত ও শক্তিশালী।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি হুঁশিয়ারি: ইরান স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে তারা যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত।

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান: এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যে নিজের অবস্থান আরও সুসংহত করতে চাইছে।মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা?

এই সামরিক মহড়ার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন, সিরিয়া ও ইরাকে ইরানের সামরিক উপস্থিতি এবং পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগ বাড়ছে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মহড়া কি শুধুই শক্তি প্রদর্শন নাকি ভবিষ্যৎ সংঘাতের ইঙ্গিত? সময়ই এর উত্তর দেবে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত—এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিল, তারা প্রস্তুত এবং আত্মরক্ষায় সক্ষম।

সূত্র ঃ https://www.youtube.com/watch?v=w7HV1CAYENc

রাজু

×