
গাজা পুনর্গঠনে পরিকল্পনা তৈরি করছে মিসর
গাজা পুনর্গঠনে পরিকল্পনা তৈরি করছে মিসর। এই পরিকল্পনা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বের না করে অঞ্চলটির পুনর্গঠনে মনোযোগ দেবে। একে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা জনশূন্য করে তা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র আল আহরাম জানায়, প্রস্তাবটিতে গাজার ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। যেখানে ফিলিস্তিনিরা প্রাথমিকভাবে বসবাস করবে, যতক্ষণ না মিসরীয় ও আন্তর্জাতিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার করে।
মিসরীয় কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপীয় কূটনীতিকদের পাশাপাশি সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আলোচনা করছেন বলে জানিয়েছেন দুজন মিসরীয় কর্মকর্তা এবং আরব ও পশ্চিমা কূটনীতিকরা। তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই আলোচনায় জড়িত কর্মকর্তা এবং কূটনীতিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এটি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। মিসরের প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো ট্রাম্পের ভুল যুক্তিকে খ-ন কর এবং গাজার ভৌগোলিক ও জনমিতিক কাঠামো পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। মিসরের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গাজার জনগণকে নিজেদের ভূমিতে পুনর্বাসন ও উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দেওয়া হবে যা ট্রাম্পের গাজা দখল ও জনশূন্য করার পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বিপরীত।
গাজা বর্তমানে একটি সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, কারণ যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব মার্চের শুরুতে শেষ হতে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইল ও হামাসকে আলোচনা করতে হবে, যার মধ্যে হামাসের হাতে আটক সকল বন্দির মুক্তি ইসরাইলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কোনো পুনর্গঠন পরিকল্পনাই সফল হবে না, যদি এই চুক্তিতে গাজার ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থার বিষয়টি স্পষ্ট না করা হয়। ইসরাইল দাবি করেছে হামাসকে গাজার রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। আর হামাস ক্ষমতায় থাকলে কোনো পুনর্গঠন তহবিল দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক দাতারা। মিসরের প্রস্তাবের অন্যতম প্রধান অংশ হলো একটি নতুন ফিলিস্তিনি প্রশাসন গঠন করা যা হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত হবে না।
এছাড়াও একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে ২০০৭ সালে গাজায় হামাসের ক্ষমতা দখলের পরও যারা পূর্বের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে কাজ করেছিল, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে মিসরীয় ও পশ্চিমা প্রশিক্ষিত বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। যদি গাজায় কোনো আরব বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি সামনে আসে, তবে আরব দেশগুলো কেবল তখনই সম্মত হবে।