![সামরিক ব্যয়ে পুরো ইউরোপকেও ছাড়িয়ে গেল রাশিয়া সামরিক ব্যয়ে পুরো ইউরোপকেও ছাড়িয়ে গেল রাশিয়া](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/BeFunky-collage-17-2502140733.jpg)
ছবি: সংগৃহিত
রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ২০২৪ সালে ইউরোপের সম্মিলিত প্রতিরক্ষা বাজেটকে ছাড়িয়ে গেছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এর ফলে দেশটির সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিরক্ষা বাজেটে কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে।
স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট (IISS) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৩.১ ট্রিলিয়ন রুবল (প্রায় ১৪৫.৯ বিলিয়ন ডলার), যা দেশটির জিডিপির ৬.৭ শতাংশের সমান। ক্রয়ক্ষমতা সামঞ্জস্য (PPP) অনুসারে, এই ব্যয় প্রায় ৪৬২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ইউরোপের দেশগুলোর সম্মিলিত সামরিক ব্যয়কে ছাড়িয়ে গেছে।
অন্যদিকে, ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়ার সামরিক তৎপরতার জবাবে প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়েছে। ২০২৪ সালে ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্মিলিত সামরিক ব্যয় ৪৫৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০১৪ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। তবে রাশিয়ার বিপুল ব্যয়ের তুলনায় এটি এখনো পিছিয়ে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তিনি চান ইউরোপ তার জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করুক, যা বর্তমান গড় ১.৭ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটেও সম্প্রতি ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির অন্তত ৩ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
IISS-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করলে অতিরিক্ত ২৫০ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে, আর ৫ শতাংশে উন্নীত করলে ব্যয় প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, যা রাশিয়ার বর্তমান প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় দ্বিগুণ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপের জন্য এই পরিমাণ ব্যয় এখনই বাস্তবসম্মত নয়, কারণ অনেক দেশ বিকল্প উপায়ে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেট অভ্যন্তরীণ ব্যয় সংক্রান্ত চাপে রয়েছে। পেন্টাগনের বাজেটে সম্ভাব্য কাটছাঁট হলে ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যয়ের আরও বড় অংশ বহন করতে হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যয়ের এই বৃদ্ধি শুধু ইউক্রেন যুদ্ধের জন্যই নয়, বরং তাদের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত লক্ষ্য পূরণেরও অংশ। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে, তা আগামী দিনগুলোতে বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
ইসরাত জাহান