ছবিঃ সংগৃহীত।
আমামিউ দ্বীপ জাপানের একটি ছোট দ্বীপ, যেখানে ১৯৮০-এর দশকে সাপের সংখ্যা অতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পায় এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। দ্বীপের পরিবেশে সাপের দাপট এতটাই বেড়ে যায় যে, স্থানীয় পাখি এবং অন্যান্য ছোট প্রাণী সাপের আক্রমণে বিপন্ন হয়ে পড়ে।
জাপান ১৯৮৯ সালে আমামিউ দ্বীপে সাপের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণের জন্য ৩০টি বেজি ছেড়ে দেয়। কিন্তু ২৫ বছর পর দেখা যায়, বেজিরা সাপের পরিবর্তে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে। এতে দ্বীপের ২৫ প্রজাতির উপকারী প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যায়, যা ইকোসিস্টেমে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে, জাপান সরকার বেজি নিধনের জন্য ২৫ বছর সময় ব্যয় করে, তবে সাপ ও ইঁদুরের সমস্যা রয়ে যায়।
সাপের উপস্থিতির কারণে স্থানীয় প্রাণী যেমন পাখি ও সরীসৃপ প্রজাতি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে দেখা যায় যে, বেজিরা সাপের বদলে দ্বীপের অন্যান্য স্থানীয় প্রাণীদের উপর হামলা শুরু করে। বেজিরা সাপের পাশাপাশি দ্বীপের অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের উপরও আক্রমণ করতে থাকে। এর ফলে, দ্বীপের ২৫টি উপকারী প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং এতে জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পরিবর্তনের কারণে, ইকোসিস্টেমের ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়, যা দ্বীপের পরিবেশকে আরো বিপজ্জনক করে তোলে।
পরবর্তীতে, জাপান সরকার বেজির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগী হয় এবং তাদের নিধন করার জন্য ২৫ বছর সময় ব্যয় করে। তবে, এই পদক্ষেপেও পুরোপুরি সমস্যার সমাধান হয়নি। সাপ এবং ইঁদুরের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল, এবং তাদের প্রভাব থেকে দ্বীপ মুক্ত হতে পারেনি। এটি একটি বাস্তব উদাহরণ যে, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে এক ধরনের পরিবেশগত পদক্ষেপ কখনও কখনও প্রত্যাশিত ফলাফল দিতে পারে না, এবং ক্ষতির চেয়ে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে স্থানীয় পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
মুহাম্মদ ওমর ফারুক