![প্রাচীনকালের পাখির জীবাশ্মের সন্ধান প্রাচীনকালের পাখির জীবাশ্মের সন্ধান](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/20-2502121502.jpg)
ছয় কোটি ৯০ লাখ বছরের পুরনো একটি পাখির জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, পৃথিবীর প্রাচীনকালের পাখির জীবাশ্ম এটি। ভেগাভিস আইয়াই নামে পরিচিত এ প্রাচীন পাখিটি ছিল হাঁস ও রাজহাঁসের আদি আত্মীয়। খবর ইয়াহু নিউজের।
ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মতো গণবিলুপ্তির ঘটনার আগেই এসব পাখিরা বিবর্তিত হয়েছিল বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষে ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানে। ফলে গণবিলুপ্তির ঘটনা ঘটে, যা নিশ্চিহ্ন করে দেয় সবধরনের অপাখি প্রজাতির ডাইনোসরকে। এ ঘটনার পরও কিছু পাখি বেঁচে ছিল। যার মধ্যে ছিল বর্তমান সময়ের জলচর পাখির প্রাথমিক পূর্বপুরুষরাও। বিজ্ঞানীদের ধারণা, গ্রহাণুর আঘাতের ফলে তৈরি ধ্বংসযজ্ঞ থেকে অনেক দূরে থাকা অ্যান্টার্কটিকা হয়তো এ পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে কাজ করেছে। ওই সময়ে অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ু ছিল অনেক উষ্ণ, যেখানে ছিল বন ও নদী। আর এই পরিবেশ পাখিদের জন্য ভালো আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলেছিল। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল নেচারে। এ নতুন গবেষণায় ২০১১ সালে অ্যান্টার্কটিকা থেকে সংগ্রহ করা ভেগাভিস আইএআই পাখিটির প্রায় সম্পূর্ণ মাথার খুলির বর্ণনা দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, ডাইনোসরের পাশাপাশি আধুনিক পাখির অস্তিত্বের সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ দিয়েছে এ জীবাশ্মটি। এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন ওহাইও ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ড. ক্রিস্টোফার টরেস। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন ইউনিভার্সিটি অফ প্যাসিফিকের অধ্যাপক হিসেবে। ভেগাভিস সত্যিই একটি আধুনিক পাখি কি না তা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বিতর্ক চলেছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। ২০ বছর আগে এ পাখিটি নিয়ে প্রথম গবেষণা করেন অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের অধ্যাপক জুলিয়া ক্লার্ক। ওই সময় এটিকে জলচর পাখির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন গবেষকরা। তবে গণবিলুপ্তির আগে আধুনিক পাখিদের জীবাশ্ম রেকর্ড পাওয়ার বিষয়টি খুবই বিরল হওয়ার কারণে এ দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন কিছু বিজ্ঞানী। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাখিটির এই সংরক্ষিত মাথার খুলি আবিষ্কারের মাধ্যমে সন্দেহের অবসান হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, নতুন এ জীবাশ্মটিতে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যার থেকে প্রমাণ মিলেছে, ভেগাভিস আধুনিক পাখি ছিল। এর মাথার খুলিতে একটি দীর্ঘ, সূঁচালো চঞ্চু ও মস্তিষ্কের আকৃতি আজকের হাঁসও রাজহাঁসের মতোই। তবে আধুনিক জলচর পাখির সঙ্গে এর কিছু পার্থক্যও রয়েছে। যেমন- ভেগাভিসের চোয়ালের পেশি ছিল শক্তিশালী, যা সম্ভবত পাখিটিকে পানির নিচে মাছ ধরতে সহায়তা করেছে। এর কঙ্কাল থেকে জানা যায়, হাঁস ও রাজহাঁসের বদলে আধুনিক গ্রিবস ও লুন প্রজাতির জলচর পাখির মতো সাঁতার কাটতে নিজেদের পা ব্যবহার করত এটি। পাখির বিবর্তন বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান অ্যান্টার্কটিকা।