ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

গাজা পুনর্গঠনে লাগবে ৫৩ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গাজা পুনর্গঠনে লাগবে ৫৩ বিলিয়ন ডলার

ইসরাইলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজার একটি এলাকা

টানা ১৫ মাস ধরে ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন ও হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার পুনর্গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলজুড়ে চলমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রয়োজন ৫৩ বিলিয়ন ডলার (৫ হাজার ৩০০ কোটি)। বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

এদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ২ হাজার অসুস্থ শিশুকে জর্ডানে আশ্রয় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দেশটির রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে এর জনগণকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় তিনি তার অবস্থানে অনঢ়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে পুনরুদ্ধার এবং পুনর্গঠনের জন্য ৫৩.১৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিন বছরে স্বল্পমেয়াদে প্রয়োজন প্রায় ২০.৫৬৮ বিলিয়ন ডলার। সংঘাতের ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজার অর্থনীতি ২০২৪ সালে ৮৩ শতাংশ সংকুচিত হবে, বেকারত্ব ৮০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দারিদ্র্য ২০২৪ সালে ৭৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের শেষে ছিল ৩৮.৮ শতাংশ। গুতেরেস জোর দিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে মানবিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষায়, তাৎক্ষণিকভাবে এবং স্বল্পমেয়াদে মানবিক সংকট মোকাবিলায় জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রদানের ওপর অবিরত মনোযোগের প্রয়োজন হবে। ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ৬.৬ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তার আবেদনের কথা স্মরণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আবেদন থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার গাজার ২১ লাখ ফিলিস্তিনির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা মেটাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায় গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়েছে। সেদিন থেকেই গাজায় বন্ধ হয়েছে ইসরাইলি আগ্রাসন। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ৮ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৮ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় পর গত মাসেই ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। তবে এরপর থেকেই সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিহতদের লাশ। আর এতে করে বেড়েই চলেছে প্রাণহানির সংখ্যা। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি গোলাবর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন এবং তারাও প্রাণহানির এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আরও ১০ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে করে ইসরাইলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬৫ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

×