![এবার ট্রাম্পের কড়া শুল্কের ফাঁদে যুক্তরাজ্য? এবার ট্রাম্পের কড়া শুল্কের ফাঁদে যুক্তরাজ্য?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/befunky_2025-1-2_22-19-44-2502111620.jpg)
ছবিঃ সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য বাজারে তেমন কোনো বড় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি। যদিও ব্রিটিশ অর্থনীতি এখনো ধাতু ও উৎপাদন শিল্পের ওপর অতীতের মতো নির্ভরশীল নয়, তথাপি এই শুল্ক যুক্তরাজ্যের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। যুক্তরাজ্যের নতুন রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনের প্রতিষ্ঠানটি এই বিষয়টিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণে বিশ্ববাজারে কিছুটা অস্থিরতা থাকলেও, যুক্তরাজ্যের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ৫-৬ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তাই সরকারের আপাতত অনুশীলন মূলক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা দরকার। শুল্ক আরোপ করলে এটি অতীতে কানাডা, মেক্সিকো ও ইউরোপের মতো দেশগুলোর সঙ্গে দর-কষাকষির বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
একসময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের স্টিল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিত, তখন লন্ডনের শেয়ারবাজার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখাত, কিন্তু আজকের দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণায় বাজারে কোনো বড় অস্থিরতা দেখা যায়নি; বরং BP-তে একজন সক্রিয় বিনিয়োগকারীর শেয়ার কেনার ফলে শেয়ারবাজারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ পেয়েছে। যদিও ব্রিটিশ অর্থনীতি এখন আগের মতো ধাতু ও উৎপাদন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল নয়, তবুও এই ধরনের শুল্ক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে যা বর্তমান পরিস্থিতিতে একেবারেই কাম্য নয়।
নতুন রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনের ওয়াশিংটনে দায়িত্ব গ্রহণের সাথে সাথে, তাঁর অন্যতম প্রধান কাজ হবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এই শুল্কের বিষয়ে আলোচনার সূচনা করা, যা তিনি এয়ার ফোর্স ওয়ানে চড়ে সুপার বোলে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ঘোষণা করেছিলেন। প্রশ্ন উঠে যে, তিনি সত্যিই শুল্ক আরোপ করবেন নাকি এটি কেবল একটি কৌশল, এবং এখনও বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। লক্ষণীয় যে, শুধু যুক্তরাজ্যই নয়, ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারও এই ঘোষণায় তেমন কোনো বিরক্তি দেখায়নি। ট্রাম্প স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন, কারণ ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১০৯.৫ বিলিয়ন ডলারের এই ধাতু আমদানি করেছিল, যেখানে যুক্তরাজ্যের অবদান ছিল অতি সামান্য, অথচ একই বছরে যুক্তরাষ্ট্র নিজেও ৫৭.৬ বিলিয়ন ডলারের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানি করেছে। তার পূর্ববর্তী মেয়াদে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরে কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোকে ছাড় দেয়া হয়েছিল, তবে ইউরোপ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে প্রতিক্রিয়া জানায়।
পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউরোপের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছান, যেখানে শুল্কের পরিবর্তে নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণ করা হয়, তবে আলোচনা ব্যর্থ হলে শুল্ক পুনরায় চালু হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাজ্যের রপ্তানিকৃত স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের যথাক্রমে মাত্র ৫ ও ৬ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়, ফলে সরকার বর্তমান পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে।
অবশেষে, যেহেতু ট্রাম্পের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশল প্রায়ই ‘লেনদেনভিত্তিক’ হয়ে থাকে, তাই গুজব রয়েছে যে, যদি যুক্তরাজ্য তাদের অনলাইন সেফটি বিল কিছুটা পরিবর্তন করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য সুবিধাজনক করে দেয়, তাহলে ট্রাম্প যুক্তরাজ্যকে শুল্ক ছাড় দিতে পারেন, তবে মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে এই গুজব অস্বীকার করা হয়েছে এবং সবশেষে পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল অবস্থায় রয়েছে।
মারিয়া