![প্রেমের উৎসবে দুঃসংবাদ! চকোলেট কিনবেন নাকি ব্রেকআপ? প্রেমের উৎসবে দুঃসংবাদ! চকোলেট কিনবেন নাকি ব্রেকআপ?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/ff14c9a7-2343-46ee-9106-19aab86ec292-2502111523.jpg)
ছবি: সংগৃহীত।
এবারের ভ্যালেন্টাইনস ডেতে চকোলেটপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে কোকোর দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যাওয়ায় চকোলেটের খুচরা মূল্য ১০-২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বিশ্বজুড়ে।
ওয়েলস ফার্গো অ্যাগ্রি-ফুড ইনস্টিটিউটের সেক্টর ম্যানেজার ডেভিড ব্রাঞ্চ জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারির পর থেকে কোকোর দাম দ্বিগুণ হয়েছে, যা সরাসরি চকোলেটের দামে প্রভাব ফেলছে।
গত ডিসেম্বরে কোকোর দাম প্রতি মেট্রিক টনে $১২,৬৪৬-এ পৌঁছায়, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম আফ্রিকায় প্রতিকূল আবহাওয়া ও ‘কোকো সোয়োলেন শুট ভাইরাস’ রোগের কারণে উৎপাদন কমে গেছে।
বিগত দুই বছরে চকোলেট তৈরির খরচ ১৬৭% পর্যন্ত বেড়েছে, যা বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি করেছে।
বিশ্বখ্যাত সুইস চকোলেট ব্র্যান্ড লিন্ডট জানিয়েছে, কোকোর উচ্চমূল্যের কারণে তারা তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যা ২০২৫ সালেও অব্যাহত থাকতে পারে। এখন একটি ৫.৭ আউন্স লিন্ডট ভ্যালেন্টাইন হার্ট চকোলেট ট্রাফলসের দাম $২১.৯৯।
অন্যদিকে, হর্ষি’স (Hershey’s) আগেভাগে কোকো কেনে বলে চলতি বছরের দাম পুরোপুরি প্রভাবিত হবে না। তবে বর্তমানে ১ পাউন্ড হর্ষি’স চকোলেট বার $১৪.৯৯ দামে বিক্রি হচ্ছে।
মনডেলেজ ইন্টারন্যাশনালের (Cadbury ও Toblerone-এর মূল প্রতিষ্ঠান) সিইও ডির্ক ভ্যান ডে পুট বলেছেন, কোকোর এতটা মূল্যবৃদ্ধি এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দামি চকোলেটে কোকোর পরিমাণ বেশি থাকায় সেগুলোর দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। যারা কম খরচে চকোলেট কিনতে চান, তারা কম কোকোযুক্ত বা বিকল্প উপাদান মিশ্রিত চকোলেট বেছে নিতে পারেন।
ওয়েলস ফার্গোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "কম কোকোযুক্ত চকোলেট বা বিকল্প উপাদান মেশানো মিষ্টিজাতীয় খাবার বেছে নিলে খরচ কিছুটা কমতে পারে।"
বর্তমানে কোকো ফিউচার মার্কেটে দাম ১৪৩% পর্যন্ত বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সোমবারের তথ্যমতে, কোকোর দাম $১০,০০০-এর নিচে নেমেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দর যেকোনো সময় আবার বেড়ে যেতে পারে। প্রতি বৃষ্টিপাতের সাথে কোকোর বাজার ওঠানামা করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলছে।
বিশ্বের ৭০% কোকো উৎপাদন হয় ঘানা ও আইভরি কোস্টে, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও রোগবালাইয়ের কারণে উৎপাদন ক্রমাগত কমছে।
ফলে, ইকুয়েডরসহ অন্যান্য দেশ এখন কোকো উৎপাদনে এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তবে, সমস্যা হলো একটি কোকো গাছ লাগানোর পর ফলন পেতে চার থেকে ছয় বছর লেগে যায়, যা বাজারের সংকটের তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে পারবে না।
বিশ্বব্যাপী কোকো সংকটের কারণে ভবিষ্যতে চকোলেটের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বছর ভ্যালেন্টাইনস ডেতে চকোলেট কিনতে গেলে দাম দেখে চমকে যেতে পারেন, তবে কম কোকোযুক্ত বা বিকল্প চকোলেট বেছে নিলে খরচ কিছুটা বাঁচানো সম্ভব।
সায়মা ইসলাম