ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

একটা চামচের সাহায্যেই জেল থেকে পালালো আসামি!

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একটা চামচের সাহায্যেই জেল থেকে পালালো আসামি!

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬২ সালের ১১ জুন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালকাট্রাস কারাগার থেকে তিনজন বন্দি পালিয়ে যায়। এই কারাগারটি এতটাই কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত ছিল যে, একে "স্কেপ-প্রুফ" বলা হতো। তবে ফ্র্যাঙ্ক মরিস ও দুই ভাই জন ও ক্ল্যারেন্স অ্যাংলিন অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখায়।

তারা ছয় মাস ধরে গোপনে একটি সুচতুর পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। তাদের সেলের বাথরুমের দেয়ালে ছোট একটি বায়ুচলাচলের ছিদ্র ছিল। তারা রান্নাঘর থেকে পাওয়া চামচ দিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে সেই ছিদ্রটি বড় করতে থাকে। পুরনো ভ্যাকিউম ক্লিনারের মোটর দিয়ে তারা নিজেরাই একটি ছোট ড্রিল বানিয়ে নেয়।

রাতের প্রহরীদের ফাঁকি দিতে তারা সাবান, কংক্রিটের গুঁড়া ও মানুষের আসল চুল দিয়ে নকল মাথা তৈরি করে। এটি তারা নিজেদের বিছানায় রেখে দিত, যাতে মনে হয় তারা ঘুমিয়ে আছে। পালানোর রাতে চারজন বন্দি একসঙ্গে বের হওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অ্যালান ওয়েস্ট বের হতে পারেনি, কারণ তার তৈরি করা গর্ত আটকে গিয়েছিল। মরিস ও অ্যাংলিন ভাইয়েরা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

তারা ছাদের ওপর আগে থেকে তৈরি করা একটি গোপন ওয়ার্কশপ থেকে রেইনকোট দিয়ে বানানো নৌকা নিয়ে বের হয়। ২৫ ফুট উঁচু লোহার বেড়া টপকে তারা সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়। পরদিন সকালে কারারক্ষীরা তাদের খোঁজ করে দেখে, তারা নেই। যখন বিছানায় থাকা মাথাগুলোর একটি মেঝেতে গড়িয়ে পড়ে, তখনই আসল ঘটনা ধরা পড়ে।

এরপর ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়। কোস্টগার্ড, এফবিআই, এমনকি মিলিটারি হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়। কিন্তু তিনজনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সরকারিভাবে বলা হয়, তারা ঠান্ডা পানিতে ডুবে মারা গেছে। তবে তাদের লাশ বা কোনো প্রমাণ কখনো পাওয়া যায়নি।

২০১৩ সালে এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দাবি করে, সে জন অ্যাংলিন এবং সে এখনো বেঁচে আছে। অ্যাংলিন পরিবারের সদস্যরাও দাবি করেন, পালানোর পর তারা তাদের ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আজও কেউ জানে না, তারা সত্যিই বেঁচে ছিল নাকি সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। এই ঘটনা আজও রহস্য হয়ে আছে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/kepzpz_tA68?si=Za5Ana6artfJ-qFA

এম.কে.

×