ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

সেভেন সিস্টার্সে তোলপাড়, রাজ্য হারালো মোদী

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৮:৪২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সেভেন সিস্টার্সে তোলপাড়, রাজ্য হারালো মোদী

ছবি: সংগৃহীত।

ভারতে যখন দিল্লি জয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিজয়োল্লাসে মত্ত, তখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মনিপুরে সহিংসতা নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিজেপি-নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং পদত্যাগ করেছেন, যা মনিপুরের চলমান সংঘাতের সঙ্গে বিজেপির সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন আরও জোরালো করেছে।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর আগে, দিল্লিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি ইম্ফলে ফিরে রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

দলের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপের মুখে ছিলেন তিনি। কংগ্রেস বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করায়, তার ক্ষমতা হারানো অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তবে বিজেপি চায়নি এই দুর্বলতা প্রকাশ পাক। তাই আগেভাগেই তাকে পদত্যাগ করানো হয়।

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মনিপুর সহিংসতায় উত্তাল। দুটি জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে, হাজার হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি অবস্থা জারি, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, এবং কঠোর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলেও সহিংসতা থামেনি।

এন. বিরেন সিংয়ের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর মনিপুরে সহিংসতার পেছনে বিজেপির ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিজেপি-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো কুকি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। নরেন্দ্র মোদির নীরবতা নিয়েও ভারতজুড়ে তুমুল সমালোচনা চলছে।

মনিপুরের চলমান সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিজেপির ভূমিকা রাজ্যটিকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো মনিপুরে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাশাপাশি, মিয়ানমার থেকে শত শত সশস্ত্র যোদ্ধার প্রবেশের খবরও পাওয়া গেছে। তাদের হাতে উন্নত অস্ত্র থাকায় মনিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

মনিপুরের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেনিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি ভারতীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত থাকার কারণে মনিপুরের ওপর ভারতীয় আধিপত্য কতদিন বজায় থাকবে—সে নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

মনিপুরের এই অস্থিরতা শুধু রাজ্যটির জন্য নয়, বরং সারা ভারতের জন্যই বড় ধরনের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজেপি সরকার মরিয়া চেষ্টা চালালেও, জাতিগত ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে সমাধান এখনও অনিশ্চিত।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=RGCI8HTzwEc

সায়মা ইসলাম

×