
ছবি: সংগৃহীত
আপনি কি কখনো শুনেছেন এমন একটি দ্বীপের কথা, যা একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও ছোট কিন্তু সেখানে বাস করেন শতাধিক মানুষ? আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া হ্রদের মাঝখানে অবস্থিত মিগিঙ্গো দ্বীপ এমনই এক জায়গা, যা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপ হিসেবে পরিচিত।
১৯৯১ সালে কেনিয়ার দুই জেলে প্রথম এই দ্বীপে আসেন। তখন এটি ছিল বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে পাখি ও সাপের আবাসস্থল। কিন্তু ২০০০-এর দশকে, যখন নীল নদের পার্চ মাছ ধরার জন্য জেলেরা এখানে আসতে শুরু করে, তখনই এই দ্বীপ জনবহুল হয়ে ওঠে।
মিগিঙ্গো দ্বীপটি অবস্থিত আফ্রিকার বৃহত্তম হ্রদ—ভিক্টোরিয়া লেকে, যা কেনিয়া, উগান্ডা ও তানজানিয়ার মধ্যবর্তী এলাকায় বিস্তৃত। যদিও দ্বীপটি খুব ছোট, তবে এর মালিকানা নিয়ে কেনিয়া ও উগান্ডার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
এর আয়তন মাত্র ০.৪৯ একর (একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও ছোট!)। জনসংখ্যা প্রায় ১৩১ জন। আর জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৫০,০০০+ মানুষ।
দ্বীপের বড় সমস্যা এখানে শৌচাগার নেই,বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই, কেনিয়া ও উগান্ডার বাহিনী দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এছাড়া এত ছোট জায়গায় এত মানুষের বসবাস স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
মিগিঙ্গো দ্বীপের আশপাশের জলাভূমিতে নীল নদের পার্চ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, যা আন্তর্জাতিক বাজারে খুব চাহিদাসম্পন্ন একটি মাছ। তাই, অর্থ উপার্জনের আশায় বহু জেলে এখানে বসবাস শুরু করেন, যদিও এখানে জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দ্বীপে অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও পরিবেশগত সমস্যা একদিন একে বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে পারে। যদিও কেনিয়া ও উগান্ডা উভয়ই দ্বীপটির মালিকানা দাবি করে, কিন্তু স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়নে এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মিগিঙ্গো দ্বীপ পৃথিবীর সবচেয়ে জনঘনত্বপূর্ণ দ্বীপ হওয়া সত্ত্বেও, এখানকার মানুষ চরম দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনযাপন করছে।
শিলা ইসলাম