ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

দানবীর প্রিন্স করিম আগা খানের জীবনাবসান

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দানবীর প্রিন্স করিম আগা খানের জীবনাবসান

প্রিন্স করিম আগা খান

আধ্যাত্মিক নেতা, ধনকুবের ও দানবীর প্রিন্স করিম আগা খান মারা গেছেন। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ৮৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি। বুধবার আগা খানের দাতব্য সংস্থা আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের। 
করিম আগা খান ছিলেন শিয়া ইসলামের ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ৪৯তম বংশগত ইমাম। তার বংশের ধারা সরাসরি মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা)-এর পরিবার থেকে এসেছে বলে তাদের দাবি। ১৯৫৭ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে দাদার স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।

সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা আগা খান ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক। ফ্রান্সের একটি প্রাসাদে তিনি বসবাস করতেন। তার মৃত্যুর সময় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিতি ছিলেন। ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার প্রয়াত মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এই আগা খান।
দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত বন্ধুর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত রাজা চার্লস। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আগা খানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসসহ অন্যান্য বিশ্বনেতা আগা খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।

আগা খান বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। বাহামাসে একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ, একটি সুপার-ইয়ট এবং ব্যক্তিগত বিমান ছিল তার। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার সম্পদ আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল ব্যবসা, বিশেষ করে ঘোড়া পালন ও রেসিং শিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে।
আগা খানের দাতব্য সংস্থা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শ শ হাসপাতাল পরিচালনার পাশাপাশি শিক্ষা এবং সংস্কৃতি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। তিনি পাকিস্তানের করাচিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং হার্ভার্ড ও এমআইটির যৌথ উদ্যোগে আগা খান প্রোগ্রাম ফর ইসলামিক আর্কিটেকচার চালু করেন। ভারতীয় ঐতিহ্যের সংরক্ষণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

বিশেষ করে দিল্লির ঐতিহাসিক হুমায়ুনের সমাধির সংস্কারে। আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক আরও জানায়, আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব, যাতে বিশ্বজুড়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো যায়, ঠিক যেমনটি তিনি চেয়েছিলেন। আনুমানিক দেড় কোটি ইসমাইলি মুসলমানের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে আগা খান দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।

পাকিস্তানে প্রায় পাঁচ লাখ ইসমাইলির বসবাস। ভারত, আফগানিস্তান ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে তাদের উপস্থিতি রয়েছে। তিনি ইউরোপের অন্যতম সফল ঘোড়া প্রজননকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বিখ্যাত ঘোড়া শেরগার ১৯৮১ সালে এপসম ডার্বি জয় করে, তবে ১৯৮৩ সালে ঘোড়াটি অপহরণ করা হয় এবং আর কখনো সেটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দাদা স্যার সুলতান মোহাম্মদ তার পুত্র প্রিন্স অ্যালি খানের বদলে প্রপৌত্র চতুর্থ আগা খানকে উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নেন। আগা খান অন্তত ১৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রেখে গেছেন।

×