চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করার পর দ্রুত পাল্টা ব্যবস্থা নিল চীন। মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, তারা মার্কিন কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কিছু গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
এই শুল্ক ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের এমন পাল্টা শুল্ক আরোপে ওয়াশিংটন ও বেজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব আরও বাড়াবে। খবর রয়টার্সের।
চীন আরও জানিয়েছে, তারা গুগলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেডের বিরুদ্ধে একটি অ্যান্টি-মনোপলি তদন্ত শুরু করছে। এছাড়া ক্যালভিন ক্লেইনের মূল কোম্পানি পিভিএইচ কর্প এবং মার্কিন বায়োটেক প্রতিষ্ঠান ইলুমিনাকে অবিশ্বস্ত সংস্থার তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়া চীন ঘোষণা করেছে-ু তারা টংস্টেন, টেলুরিয়াম, রুথেনিয়াম, মলিবডেনাম ও রুথেনিয়াম সম্পর্কিত পণ্যের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করবে, যা তারা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে করছে।
চীন এই গুরুত্বপূর্ণ দুর্লভ খনিজ উপাদানের বৈশ্বিক সরবরাহের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে, যা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উন্নয়নে অপরিহার্য। মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ শেষ মুহূর্তে স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। সীমান্ত ও অপরাধ দমনে কিছু ছাড় পাওয়ার শর্তে ৩০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করেছেন তিনি। তবে চীনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। কারণ ট্রাম্পের দাবি, বেজিং মাদক পাচার বিশেষ করে ফেন্টানিল প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
চীনের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর হংকং শেয়ার বাজারে উত্থান কিছুটা কমে গেছে, ডলার শক্তিশালী হয়েছে এবং চীনা ইউয়ান দুর্বল হয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়ান ডলারকেও প্রভাবিত করেছে। এদিকে দক্ষিণ চীন সাগরের আকাশসীমায় যৌথ মহড়া পরিচালনা করেছে ফিলিপিন্স ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিতর্কিত এলাকায় সামরিক টহল দিয়েছে বেজিং।
ফিলিপিন্স বিমান বাহিনীর মুখপাত্র মারিয়া কনসুয়েলো কাসতিলো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পশ্চিম ফিলিপিন্স সাগরে একদিনের এই মহড়া চালানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অনুযায়ী, দক্ষিণ চীন সাগরের ওই অংশ ম্যানিলার একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন বা ইইজেড) আওতাভুক্ত। কাসতিলো আরও বলেছেন, দুদেশের বিমান বাহিনীর অভিযান পরিচালনায় কার্যকর সমন্বয় বৃদ্ধি, আকাশসীমায় সতর্কতা উন্নতকরণ এবং যুদ্ধ সক্ষমতা জোরদার করতে এই মহড়া চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অভিযোগ জানিয়ে বেজিং বলেছে, দক্ষিণ চীন সাগরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে বিদেশী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহড়া পরিচালনা করেছে ম্যানিলা। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে কোনো সামরিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চীনের সার্বভৌমত্ব এবং সামুদ্রিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখবে চীনা বিমান বাহিনী।