ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটির ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং এটি কেবল মিয়ানমারের জন্য নয়, বরং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্যও একটি বড় সংকট তৈরি করেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
এক্ষেত্রে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ ঐক্য। মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী নানা কারণে একে অপরের সাথে বিরোধে জড়িয়ে আছে, এবং তাদের মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন। যদিও কিছু গোষ্ঠী স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একতাবদ্ধ হতে চায়, তাদের মধ্যে গুণগতভাবে পার্থক্য এবং ঐতিহাসিক অসন্তোষ রয়েছে, যা তাদের একতাবদ্ধ হওয়া কঠিন করে তোলে।
দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি এবং বিশ্ব শক্তিশালী দেশের সমর্থন দরকার। কিন্তু, এই সমর্থন পাওয়া সহজ নয়, কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির মধ্যে নানা স্বার্থ জড়িত থাকে। চীন ও অন্যান্য পরাশক্তি মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে সরাসরি জড়িত, এবং তাদের নীতি ও স্বার্থ মিয়ানমারের ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশের জন্য মিয়ানমারের পরিস্থিতি একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। কক্সবাজার সীমান্তের কাছে আরাকান আর্মির নতুন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। রোহিঙ্গা সংকট এবং সীমান্ত সমস্যা বাংলাদেশকে কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে প্রস্তুত থাকার জন্য বাধ্য করছে।
সবশেষে, মিয়ানমারের নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামরিক শক্তির উপর নির্ভর করছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া এটি সফল হতে পারে না। রাজনৈতিক স্বার্থ, সামরিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সঠিক ভারসাম্য স্থাপন না হলে মিয়ানমারে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা কঠিনই থাকবে।
অনিক