ইউএসএআইডি
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে ‘অপরাধী সংস্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান ধনকুবের ইলন মাস্ক। তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে জল্পনার মধ্যেই সিএনএন জানিয়েছে, সোমবার ওয়াশিংটনে প্রধান কার্যালয় বন্ধ ছিল। এর আগে মধ্যরাতে কর্মীদের মেইল করে অফিসে যেতে নিষেধ করা হয়।
বলা হয়, এজেন্সি নেতৃত্বের নির্দেশে ওয়াশিংটনের রোনাল্ড রিগ্যান ভবনে অবস্থিত ইউএসএআইডি সদর দপ্তর সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) কর্মীদের জন্য বন্ধ থাকবে। ইউএসএআইডি সদর দপ্তরে যাঁদের নির্ধারিত কাজ রয়েছে, তাঁরা এদিন বাসা থেকে কাজ করবেন। তবে জরুরি কর্মী ও ভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত সপ্তাহে ইউএসএআইডির অফিস থেকে সংস্থাটির লোগো এবং বিশ্বব্যাপী তাদের নানা মানবিক কাজের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়। সংস্থাটির একজন কর্মী সিএনএনকে বলেন, ‘সব ভিজ্যুয়াল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। লবি, রান্নাঘর ও করিডরে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের যেসব ছবি ছিল, তার সবই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
আরেকজন কর্মী বলেন, ‘তারা দেয়াল থেকে ছবি সরিয়ে ফেলেছে, আমাদের সহকর্মীদের অর্ধেক চলে গেছে বা বরখাস্ত হয়েছে। সবাই ভাবছে, তাঁরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।’ সংস্থার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে কোনো তথ্য আছে কি না, এমন প্রশ্নে এক কর্মী বলেন, ‘আমাদের ঊর্ধ্বতনদের সবাইকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
সোমবার ভোরে ধনকুবের ইলন মাস্কের এক বক্তব্যেই সংস্থাটি নিয়ে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হয়। ইলন মাস্ক বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় ট্রাম্প সম্মতি দিয়েছেন, সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এর আগে গত রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইউএসএআইডি পরিচালনা করছে ‘উন্মাদ উগ্রপন্থীরা’ এবং তিনি এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের মতে, সংস্থাটি সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না এবং তাঁর প্রশাসন এটি সংস্কার বা বন্ধের পরিকল্পনা করছে।
এক্সে এক পডকাস্টে এ নিয়ে আলোচনায় ইলন মাস্ক বলেন, ইউএসএআইডি ‘অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ সংস্থা। যদিও নিজের এমন বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি তিনি।
পডকাস্টে অংশ নিয়ে আইওয়ার রিপাবলিকান সিনেটর জোনি আর্নস্ট বলেন, সংস্থাটির কিছু কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে এটি অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি সত্যিকারের আমেরিকান স্বার্থ রক্ষাকারী কোনো কর্মসূচি তাদের থাকে, তাহলে সেগুলো পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নেওয়া যেতে পারে। সিনেটর জোনি আর্নস্টের এমন প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে ইলন মাস্ক বলেন, এটিই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে ডিওজিইর সাবেক বস বিবেক রামাস্বামী সংস্থাটি পুরোপুরিভাবে বিলুপ্ত করে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।
এদিকে সিনেটের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা গত রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন, ডিওজিই প্রতিনিধিদের ইউএসএআইডি সদর দপ্তরে যাওয়া এবং সংস্থার কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর কারণে জাতীয় নিরাপত্তার ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
শহীদ