ছবিঃ সংগৃহীত।
সংসারের আর্থিক অবস্থার অবনতির ফলে গৃহবধূ স্বামীকে কিডনি বিক্রি করার প্রস্তাব দেন, এবং স্বামী সেই প্রস্তাব মেনে নিজের কিডনি বিক্রি করে সমস্ত টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দেন। কিন্তু স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি আর কোনো আগ্রহ দেখাননি। তার পরিবর্তে, প্রেমিকের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার জন্য তিনি স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যান। বিশ্বাস করে নিজের কিডনি বিক্রির ১০ লক্ষ টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। স্বামীকে কিছু না বলেই প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়ল গৃহবধূ সুপর্ণা বেজ। এখন ভাঙা শরীরে কার্যত নিঃস্ব অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন সাঁকরাইল এর নিজের বাড়িতে। চাইছেন বিশ্বাসঘাতকতার বিচার।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাঁকরাইলের ধুলোগড় ব্যানার্জি পোল এলাকার পিন্টু বেজ (৩৮) এর স্ত্রী সুপর্ণা বেজ প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। ১৬ বছর আগে পাঁচলার গঙ্গাধরপুরে এক বিয়ে বাড়িতে পরিচয়ের পর প্রেমে পড়ে তারা মন্দিরে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তাদের একটি মেয়ে হয় এবং পিন্টু কারখানায় কাজ করতে থাকেন, তার উপার্জন দিয়ে সংসারের খরচ চলত।
কিন্তু কিছু মাস আগে, সংসারের আর্থিক দুরবস্থা কাটাতে পিন্টুর স্ত্রী তাকে কিডনি বিক্রির প্রস্তাব দেন। পিন্টু তার স্ত্রীর কথায় বিশ্বাস রেখে রাজি হন এবং এক প্রক্রিয়ায় তিনি একটি কিডনি বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা পান। এই টাকা পিন্টুর স্ত্রীকে দেয়ার পর, পিন্টু বিশ্রাম নিতে বাড়িতে থাকলে তার স্ত্রী একদিন বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে চলে যান। পরে তিনি তার স্ত্রীর মিসিং ডায়েরি করেন সাঁকরাইল থানায়।
তবে, পরে পিন্টু জানতে পারেন যে তার স্ত্রী রবি দাস নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে প্রেম করছেন এবং তাকে নিয়ে ব্যারাকপুরে চলে গেছেন। পিন্টু তার মেয়ে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে রবির বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর ফিরে আসার চেষ্টা করলেও, তিনি ফিরতে রাজি হননি।
শেষমেশ পিন্টু কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেও, পুলিশ তাকে জানিয়ে দেয় যে, তার স্ত্রী নিজের ইচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন, তাই এ ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই। বর্তমানে, পিন্টু তার ভাঙা শরীরে অধিকাংশ সময় শুয়ে কাটাচ্ছেন, দুর্বলতার কারণে কাজ করতে পারছেন না। তার ধারণা, ১৬ বছর একসঙ্গে থাকার পর স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতায় তিনি সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তিনি চান, তার স্ত্রীর এবং প্রেমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং তার হারানো টাকা ফেরত পেয়ে তিনি যেন কিছুটা সান্ত্বনা পান।
মুহাম্মদ ওমর ফারুক