ছবি: সংগৃহীত
পারস্য উপসাগরের দক্ষিণে ইরান নতুন একটি কৌশলগত ভূগর্ভস্থ নৌঘাটি উন্মোচন করেছে, যা দেশটির সামরিক শক্তির এক নতুন যুগের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই স্থাপনাটি সম্পূর্ণ ভূগর্ভস্থ, যেখানে দ্রুত আক্রমণকারী নৌযান ও মিসাইল সজ্জিত জাহাজ রাখা সম্ভব। নতুন নৌঘাটিটি পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালী এলাকায় ইরানের সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।
আইআরজিসি (ইরানি রেভ্যুলিউশনারি গার্ড কর্পস) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামি এবং আইআরজিসি নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আলী রেজা তামশিরি উপস্থিত থেকে এই নতুন অস্ত্রাগার পরিদর্শন করেন। এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনাটিতে টর্পেডো লঞ্চিং সিস্টেম, মাইন স্থাপনে সক্ষম জাহাজ, এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি দ্রুত আক্রমণকারী নৌযান সংরক্ষণ করা যাবে, যা ইরানের সামরিক শক্তি আরও বৃদ্ধি করবে।
মেজর জেনারেল সালামি বলেন, "এই নতুন নৌঘাটিটি আইআরজিসির নৌবাহিনীর সামরিক সক্ষমতার একটি ক্ষুদ্র অংশ। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সমুদ্র সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা, এবং যুদ্ধ প্রস্তুতির প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়া।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, পারস্য উপসাগরে ইতোমধ্যেই ক্ষেপনাস্ত্র সজ্জিত জাহাজ টহল দিচ্ছে এবং এসব জাহাজসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিভিন্ন সামরিক মিশনে প্রস্তুত রয়েছে।
ইরান তার মিসাইল শক্তি এবং সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই ভূগর্ভস্থ নৌঘাটিটি ৫০০ মিটার গভীরে নির্মিত একটি গোপন স্থাপনা, যা দেশটির সামরিক রণনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরান জানায়, এই সমস্ত নতুন উদ্যোগ তাদের পরমাণু কর্মসূচী রক্ষা করতে এবং প্রতিরক্ষা ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।
এই শক্তি প্রদর্শন এমন এক সময় এসেছে, যখন ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। বিশেষ করে, ইসরাইলের দাবি, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং তাদের পরমাণু কর্মসূচীকে শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান এই সময়টিতে নিজেদের সামরিক শক্তি এবং প্রস্তুতির বার্তা দিতে চাইছে, যাতে তারা পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ মোকাবিলা করতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের সামরিক হুমকির প্রেক্ষাপটে এ ধরনের শক্তি প্রদর্শন একটি স্পষ্ট বার্তা।
তৌহিদ