ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

মিয়ানমারে ভারতের বাড়তি অর্থসহায়তার নেপথ্যে কি?

প্রকাশিত: ১৬:০১, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মিয়ানমারে ভারতের বাড়তি অর্থসহায়তার নেপথ্যে কি?

ভারত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের জন্য আর্থিক বরাদ্দ বাড়িয়েছে। নতুন করে আরও ১০০ কোটি রুপি যোগ করে মোট ৩৫০ কোটি রুপি সহায়তা দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কৌশলগত বাস্তবতা বিবেচনায় ভারত তার প্রতিরক্ষা বাজেটও বাড়িয়েছে। নতুন অর্থবছরে প্রায় ১০% প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি করেছে মোদী সরকার, যা দেশের সামরিক শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ভারতের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি ও মিয়ানমারে তার প্রভাব মোকাবিলায় এই পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার বর্তমানে চরম অস্থিতিশীলতার মুখে রয়েছে। দেশজুড়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে আরাকান আর্মির সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে জান্তা সরকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি, যা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য নতুন হুমকি তৈরি করেছে। যদিও রাখাইনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বিদ্রোহীরা, তবু সরকারি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে।

এছাড়া  মিয়ানমারের চলমান সংঘর্ষ ও সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের ফলে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢলের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। পশ্চিমা দেশগুলো জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা মিয়ানমার সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ভারতের এই বাড়তি অর্থসহায়তা জান্তা সরকারের টিকে থাকার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের এই সহায়তা কেবল অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলা করতে ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। 

আফরোজা

×