ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের বন্দীরা ইসরাইলি কারাগারে থেকেও নিজেদের বংশবৃদ্ধির জন্য অবলম্বন করছেন অভিনব কৌশল। গোপন উপায়ে কারাগার থেকে শুক্রাণু পাঠিয়ে স্ত্রীদের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দিচ্ছেন তারা।
সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের বয়ানে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা একদিকে হৃদয়স্পর্শী, অন্যদিকে ইসরাইলের প্রতি এক নীরব প্রতিবাদ।
পশ্চিম তীরের বাসিন্দা মোহাম্মদ রূপ, যিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন, তিনিও এই অভিনব পদ্ধতির মাধ্যমে বাবা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে তার স্ত্রী গর্ভধারণ করতে সক্ষম হন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি প্রথমবারের মতো ২০ মাস বয়সী সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, "আমার সন্তান অলৌকিক কিছু, ওকে দেখে মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।"
ফিলিস্তিনের বন্দীদের মধ্যে এই পদ্ধতি নতুন নয়। একবার ইসরাইলের কারাগারে বন্দি হলে মুক্তি পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। তাই অনেক বন্দীই অতি গোপনীয়তার সাথে শুক্রাণু পাঠিয়ে থাকেন পরিবারের কাছে। এটি কীভাবে সম্ভব হচ্ছে সে বিষয়ে তারা মুখ খুলতে নারাজ। তবে সফল হলে, ফার্টিলিটি হাসপাতালের মাধ্যমে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) পদ্ধতিতে নারীরা গর্ভধারণ করেন।
একজন ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ বলেন, "সত্যি বলতে আমি জানি না কারাগার থেকে কীভাবে শুক্রাণু আনা হয়, আর জানতেও চাই না। আমি শুধু মানবিক কারণে এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।" বন্দীদের স্ত্রীদের জীবন অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে স্বামীরা বন্দি হলে, তাই এই পদ্ধতিই তাদের একমাত্র আশার আলো হয়ে উঠেছে।
ফিলিস্তিনি বন্দীরা তাদের বংশবৃদ্ধির এই প্রচেষ্টাকে ইসরাইলি নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। এই অভিনব কৌশলের মাধ্যমে তারা দেখিয়ে দিচ্ছেন, বন্দিত্বের শৃঙ্খল তাদের ভবিষ্যৎ রুদ্ধ করতে পারবে না।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/s_qhoWZZXNM?si=mG83f9WtjGJN9SLH
এম.কে.