ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

একের পর এক ধস, কোন ভুলের খেসারত দিচ্ছেন মোদি?

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:৪৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একের পর এক ধস, কোন ভুলের খেসারত দিচ্ছেন মোদি?

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় দেশটির স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, এই ধাক্কা ভারতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতের মেডিক্যাল ট্যুরিজম খাত এবং বিনিয়োগ প্রবাহ আরও সংকুচিত হতে পারে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বিদেশি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ, যার মধ্যে ৬০ শতাংশই বাংলাদেশি। তবে গত বছরের আগস্ট থেকে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে।

ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার তথ্যমতে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে বাংলাদেশ-ভারত ভিসা কেন্দ্রে প্রতিদিন ৭,০০০ অনলাইন ভিসা ইস্যু করা হতো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর এই সংখ্যা কমে মাত্র ৫০০-তে নেমে এসেছে। ফলে, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরের হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

আগস্টের আগে কলকাতার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিতেন, যা বর্তমানে ৩০ জনের নিচে নেমে এসেছে। চিকিৎসা খাতে বিদেশি রোগীর আগমন কমে যাওয়ায় হাসপাতালগুলো আর্থিক সংকটে পড়ছে, যা ভারতীয় স্বাস্থ্য খাতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

২০২৩ সালে ভারত মেডিক্যাল ট্যুরিজম খাত থেকে আয় করেছে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর একটি বড় অংশ বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা ব্যয়ে এসেছে। তবে রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এই আয়ও ব্যাপকভাবে কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা যদি এভাবে কমতে থাকে, তাহলে ভারতের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগও হ্রাস পাবে। পাশাপাশি, হাসপাতালগুলোর কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই মেডিক্যাল ট্যুরিজম খাতে এ বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান দিন দিন দুর্বল হচ্ছে, যার প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়ছে।

এদিকে, বন্ধু ট্রাম্পের বিজয়ে মোদি সরকার কিছুটা আশার আলো দেখলেও ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো তাতে জল ঢেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত যদি দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারে, তাহলে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে আরও গভীর মন্দা দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা ভ্রমণ কমে যাওয়ার ফলে ভারতের মেডিক্যাল ট্যুরিজম খাতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এটি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাতেই নয়, ভারতের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=TIE_PfT2oP4

সায়মা ইসলাম

×