ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ায় নতুন শাসকদের অনুগত যোদ্ধারা গত ৭২ ঘণ্টায় অন্তত ৩৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলের কর্মকর্তা ছিলেন। মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় হোমস শহরে নিরাপত্তা অভিযানের নামে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সদস্যরাও রয়েছেন, যাদের উপর ‘নির্যাতন ও অপমান’ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, যারা নতুন প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে গিয়েছিলেন।
এদিকে, সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, হোমস অঞ্চলে নতুন কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে "নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করার" অভিযোগ আনা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করেছে, নতুন শাসকদের অধীনে কাজ করা কিছু স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত। তারা সাম্প্রদায়িক প্রতিশোধ এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এমন অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।
অবজারভেটরি আরও জানিয়েছে, নতুন সুন্নি ইসলামপন্থী জোটের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন গোষ্ঠী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালাচ্ছে এবং আলাওয়ি সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতিশোধমূলকভাবে হত্যা করছে।
সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যে তাদের অধিকার রক্ষা করা হবে। তবে বাস্তবে, সহিংসতার মাত্রা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা সিভিল পিস গ্রুপ জানিয়েছে, হোমস অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে সাধারণ নাগরিকদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। তারা বলেছে, অহিংস ও নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন নতুন শাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা সহিংসতা বন্ধ করে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।