ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু, যোগীকে মোদির ফোন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু, যোগীকে মোদির ফোন

পদপিষ্ট.হয়ে মৃত্যু

আশঙ্কা ছিল গোড়া থেকেই। কিন্তু গত কয়েক মাসে বারে বারেই তা উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর সরকারের মন্ত্রী আধিকারিকেরা। পদপিষ্টের সম্ভাবনা এড়িয়ে কোটি কোটি পুণ্যার্থীর নিশ্ছিদ্র সুরক্ষার আয়োজনের দাবি করেছেন তাঁরা। যাকে অবিহিত করেছেন এক নতুন শব্দবন্ধে— ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট’।

কিন্তু বুধবার ভোরে প্রয়াগরাজে মৌনী অমাবস্যার শাহি স্নানের গোড়াতেই সামনে চলে এল ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যর্থতার ছবি। যার তুলনা টানতে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে সেই পুরনো প্রবাদ— বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া।

মঙ্গলবার গভীর রাতেই হুড়োহুড়ি থেকে পদপিষ্টের ঘটনা শুরু হয়েছিল প্রয়াগরাজে। দিনভর নিশ্চুপ থাকার পর বুধের সন্ধ্যায় প্রয়াগরাজের ডিআইজি বৈভব কৃষ্ণ সাংবাদিক বৈঠক জানিয়েছেন, গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর সঙ্গমে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। গুরুতর আহত কমপক্ষে ৬০ জন। প্রয়াগরাজে শাহি স্নানে ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে যোগী সরকারের পুলিশ, র‌্যাফের পাশাপাশি ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ-ও। যার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের।

এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ ইতিমধ্যেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। তাঁদের অভিযোগ জনা দু’য়েক যুবক গভীর রাতে হঠাৎ ত্রিবেণী সঙ্গমের ভিড়ে বোমার গুজব ছড়ায়। আর তা থেকেই সৃষ্টি হয় হুড়োহুড়ি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথও বুধবার পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘কোনও গুজবে কান দেবেন না।’’ বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ গাফিলতি এড়াতে শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রের তত্ত্বকেই ‘হাওয়া দেবে’ উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার।


কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?

প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নানে’র সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিল যোগী সরকার। তা সত্ত্বেও কেন দুর্ঘটনার শিকার হলেন পুণ্যার্থীরা? প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ একসঙ্গে প্রচুর মানুষ সঙ্গমের তীরে এসে পৌঁছেছিলেন। অনেকেই মাথায় ভারী মালপত্র নিয়ে এসেছিলেন স্নান করতে। নদীর তীরে লোহার বেশ কিছু ডাস্টবিন রাখা ছিল, যা ভিড়ের মধ্যে অনেকেরই দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। তাতেই ধাক্কা খেয়ে বহু পুণ্যার্থী মাটিতে পড়ে যান। মাথায় থাকা মালপত্রও ছিটকে পড়ে। মালপত্র এবং মাটিতে পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরও অনেকে পড়ে যান। তাঁদের মাড়িয়েই এগোতে থাকেন অন্যেরা। ভিড়ের চাপে ভেঙে পড়ে অনেকগুলি ব্যারিকেড। চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় আধাসেনা।

 
বস্তুত, মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে কোটি কোটি মানুষের ভিড় হয়েছিল প্রয়াগরাজে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘অমৃত স্নান’ করতে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন পুণ্যার্থীরা। প্রকাশিত কিছু খবরে দাবি, রাত গড়াতে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই পুণ্যার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আচমকা ধাক্কাধাক্কি শুরু হওয়ায় ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়েন অনেকে। তবে দুর্ঘটনার পর পরই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। আহতদের উদ্ধার করে মেলাপ্রাঙ্গণেরই হাসপাতালে আনা হয়। মেলাপ্রাঙ্গণের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

শহীদ

×