ছবি: সংগৃহীত।
কলম্বিয়ার পর এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের বিতাড়নের ঘটনায় ব্রাজিল সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে অবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করেছে।
শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের বহনকারী একটি উড়োজাহাজ ব্রাজিলের মানাউসে অবতরণ করে। এতে ৮৮ জন ব্রাজিলিয়ান নাগরিক ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, যাত্রীদের হাতকড়া পরানো ছিল, পানি সরবরাহ করা হয়নি, এমনকি বাথরুম ব্যবহারের অনুমতিও দেওয়া হয়নি। এতে কয়েকজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ব্রাজিল সরকারের মানবাধিকারমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাত্রীদের মধ্যে অটিজম থাকা শিশুরাও ছিল, যারা এই ভয়ানক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। এক যাত্রী, এদগার দা সিলভা মোউরা বলেন, “আমাদের হাত-পা বাঁধা ছিল, বাথরুমে যেতে দেওয়া হয়নি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় প্রচণ্ড গরমে অনেকে জ্ঞান হারান।”
ফ্রিল্যান্সার লুইজ অ্যান্টোনিও রদ্রিগুয়েজ সান্তোস অভিযোগ করেন, “অভিবাসীদের এখন অপরাধীদের মত করা হচ্ছে। উড়োজাহাজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বন্ধ থাকায় আমাদের দুর্বিষহ সময় কাটাতে হয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসন নীতিতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন। নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধরপাকড় ও গণহারে বিতাড়ন চলছে। তবে ব্রাজিল সরকার বলছে, এ ধরনের আচরণ মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি ব্রাজিলিয়ান এয়ার ফোর্সের একটি উড়োজাহাজ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে অভিবাসীদের সম্মানের সঙ্গে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
ব্রাজিলের বিচার মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তা তাদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবমাননা। ব্রাজিলের টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, অনেকে হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরিহিত অবস্থায় উড়োজাহাজ থেকে নেমেছেন।
ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে পদক্ষেপ নেবে। শুধু ব্রাজিল নয়, কলম্বিয়া ও গুয়াতেমালার অভিবাসীদেরও একই ধরনের প্রক্রিয়ায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যেই এমন অমানবিক আচরণ নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সূত্র: এপি।
সায়মা ইসলাম