ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত

ট্রাম্পের গাজা খালি করার প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা ফিলিস্তিনিদের

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০৭:৪৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ট্রাম্পের গাজা খালি করার প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা ফিলিস্তিনিদের

ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনি জনগণ ও কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ট্রাম্প গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরের প্রস্তাব করেছেন, যা জাতিগত নির্মূলের শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

শনিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, “গাজা খালি করার” সময় এসেছে। তিনি জর্ডান ও মিশরের নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনিদের সাময়িক বা স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। তবে ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

গাজার বাসিন্দা নাফিজ হালাওয়া আল জাজিরাকে বলেন, “মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না। দুর্বলরা হয়তো কষ্টের কারণে চলে যেতে পারে, কিন্তু আমাদের দেশ ছেড়ে যাওয়া—এটা একেবারেই অসম্ভব।”

গাজার আরেক বাসিন্দা ইলহাম আল-শাবলি বলেন, “যদি আমাদের যেতে হতো, আমরা অনেক আগেই চলে যেতাম। তারা গণহত্যা চালিয়ে কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না। আমরা আমাদের দেশেই থাকব।”

রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এক বিবৃতিতে জানায়, “এই প্রস্তাব আমাদের ‘লাল সীমা’র সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” তারা আরও বলেছে, “ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমি বা পবিত্র স্থান কখনোই ত্যাগ করবে না। আমরা ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।”

 

হামাস ও পিআইজের প্রতিক্রিয়া

গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস এই প্রস্তাবকে “ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের” সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণ ইতিমধ্যে “গণহত্যা ও স্থানান্তরের ভয়াবহ কাজ” মোকাবিলা করছে।

ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) ট্রাম্পের মন্তব্যকে “যুদ্ধাপরাধে উৎসাহ প্রদান” হিসেবে অভিহিত করেছে।

 

জর্ডানের প্রতিক্রিয়া

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান সাফাদি বলেছেন, “উচ্ছেদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তনীয়।” তিনি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির লক্ষ্যে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

 

ইসরায়েল ও গাজার পরিস্থিতি

ট্রাম্পের মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের তাদের ঘরে ফিরতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ক্রসিং পয়েন্ট খুলবে না, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ তাদের কাছে আটক থাকা একজন ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দেবে।

আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানান, গাজার রাশদীদ স্ট্রিটে ক্রসিং পয়েন্টে অপেক্ষমাণ মানুষের জন্য কোনো আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেই।

“এখানে তাবু নেই। মানুষ তাবু খুলে ফেলেছে, কারণ তারা ভেবেছিল বন্দি বিনিময়ের পর উত্তর গাজায় ফিরতে পারবে। তবে তারা হয়তো আবার আজ রাত এখানে কাটাবে,” তিনি বলেন।

 

সূত্র: আল জাজিরা

মো. মহিউদ্দিন

×