ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন সংকটের মুখে পড়েছেন। ১৮ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এতটা চাপে তাকে কখনও পড়তে দেখা যায়নি।
ইহুদিবাদী এই শাসক যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হন, তখন ভেবেছিলেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নির্মূল করবেন। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার উল্টোটা।
গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে ৪২ দিনের জন্য একটি শান্তি চুক্তিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন নেতানিয়াহু। দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তির শর্তগুলো ইতোমধ্যেই কার্যকর করা শুরু হয়েছে। চুক্তির মেয়াদ শেষে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে আবার আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ।
যদিও এই সিদ্ধান্তে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতারা ক্ষুব্ধ। সামরিক বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ হারি হালেফি এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আহরন হালিভা দুজনই ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। এতে সামরিক নেতৃত্বের উপর নেতানিয়াহুর আস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারও ভাঙনের মুখে। উগ্র ডানপন্থী দল ওজমা ইয়াহুদীদের প্রধান এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেনগভীর জোট সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিকে একপ্রকার পরাজয় হিসেবে দেখছেন এবং বাকি উগ্রপন্থী আইন প্রণেতাদেরও পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
এর ফলে নেতানিয়াহুর জোট সরকার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হতে পারে ইসরায়েল। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে সেনাবাহিনীর রিজার্ভ ফোর্সের প্রধান জেনারেল আইজ্যাক বারাক দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গিও নেতানিয়াহুর জন্য চাপ বাড়াচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মধ্যপ্রাচ্য নীতি অনুযায়ী ইসরাইল ও সৌদি আরবের সম্পর্ক উন্নত করতে এবং ইরানকে দমাতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প পরিষ্কার জানিয়েছেন, "এটা আমাদের যুদ্ধ নয়, তাদের যুদ্ধ।"
নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। জোট সরকারের ভাঙন, সামরিক নেতৃত্বের সমর্থন হারানো, এবং অভ্যন্তরীণ-বাহ্যিক চাপ মিলিয়ে তার প্রধানমন্ত্রীত্বের পথ আরও সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/WxdQAySbcHo?si=zLRk3WNLWv9sXCLs
এম.কে.