ছবিঃ সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু দিন ধরে পানামা খাল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। তিনি এটিকে "পানামার জন্য বোকামিপূর্ণ উপহার" বলেছেন এবং দাবি করেছেন এটি কখনোই দেওয়া উচিত ছিল না। এমনকি তিনি খালটি পুনরায় আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
তিনি আরও দাবি করেছেন, চীন এই খাল নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০২৫ সালে তার অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি প্রমাণ ছাড়া বলেন, "চীন এখন পানামা খাল পরিচালনা করছে। আমরা এটি চীনকে দেইনি, পানামাকে দিয়েছিলাম। আমরা এটি আবার ফিরে নিচ্ছি।"
কিন্তু আসলে চীনের কতটা প্রভাব রয়েছে এই খালের উপর?
পানামা খালের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?
৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল আটলান্টিক এবং প্যাসিফিক মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে। এটি ১৯০০-এর দশকের শুরুতে আমেরিকার দ্বারা নির্মিত এবং পরিচালিত হলেও, ১৯৭৭ সালে একটি চুক্তির মাধ্যমে পানামার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০২১ সালে পানামা পোর্টস কোম্পানি (PPC) এর সাথে পরিচালনার চুক্তি আরও ২৫ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। বর্তমানে আমেরিকা এই খালের সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী এবং এখানে পরিবাহিত মালামালের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই আমেরিকার। চীন এই তালিকায় অনেক পিছিয়ে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
তাহলে চীনের প্রভাব কোথায়?
খালের দুই প্রান্তে দুটি বন্দর রয়েছে, যা একটি হংকং ভিত্তিক কোম্পানি পরিচালনা করে। ট্রাম্প যখন বলেন "চীন দুই প্রান্তেই উপস্থিত", সম্ভবত তিনি এটাই বুঝিয়েছেন।
পানামার মোট পাঁচটি বন্দর রয়েছে, যেগুলোর মালিকানা বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির হাতে, যার মধ্যে আমেরিকার কোম্পানিও আছে।
১৯৯৬ সালে পানামা একটি হংকং কোম্পানি, তখনকার হাচিসন-হোয়াম্পোয়া (বর্তমানে হাচিসন পোর্টস) কে এই বন্দরের পরিচালনার অনুমতি দেয়। তবে এতে মালিকানা দেওয়া হয়নি; বরং পানামা সরকারের পক্ষে পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
আমরা কি চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে?
কিছু আমেরিকান কর্মকর্তারা চীনা কোম্পানির উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্পের বক্তব্য মূলত চীনের লাতিন আমেরিকায় ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপস্থিতি সীমিত করতেই দেওয়া।
২০১৭ সালে পানামা চীনের "বেল্ট অ্যান্ড রোড" উদ্যোগে যোগ দেয়, যা চীনের বৈশ্বিক প্রভাব বৃদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। তবে সমালোচকরা একে "অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ" বলে থাকেন।
পানামার বক্তব্য কী?
পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো জোর দিয়ে বলেছেন যে, খালের উপর বিদেশি প্রভাব নেই এবং এটি পানামা নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করছে। “পানামা খাল ছিল, আছে এবং থাকবে আমাদেরই,” বলেছেন তিনি।
মারিয়া