ছবি : সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত্রু তালিকার প্রথম নামটি যেন অভিবাসী। যতই বন্ধুত্বের কথা বলুন, ট্রাম্পের ক্ষোভে পড়তে পারেন কয়েক লাখ ভারতীয়। অবস্থা আগাম বুঝতে পেরে ১৮০০০ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত আনার তৎপরতা শুরু করেছে ভারত। এমনিতেই ধরপাকড়ে এসব অভিবাসীকে দেশটি থেকে বের করে দেবে মার্কিন প্রশাসন। তবে মোদি সরকার আগ বাড়িয়ে তাদের আনার কথা জানিয়ে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে আরো বেশি ভালো ভারতীয়কে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে তথ্য উঠে আসছে।
যদিও গণমাধ্যমগুলো বলছে, কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নিয়ে ট্রাম্পের কাছে বিব্রত হওয়া ঠেকাতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন মোদি।
সোমবার হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময় নষ্ট না করে প্রথম দিনেই যেসব নির্বাহী আদেশে তিনি সই করেছেন, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অভিবাসীদের মধ্যে শুরু হয় আতঙ্ক। অভিবাসন বন্ধ, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো ও জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া বন্ধের মতো কঠোর আইন সামনে এনেছেন ট্রাম্প। মেক্সিকো সীমান্তে জারি করেছেন জরুরি অবস্থা। অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর বল প্রয়োগের ঘোষণাও দিয়েছেন এই নেতা।
সদ্যই দায়িত্ব নেয়া ট্রাম্প প্রশাসনের সুনজরে থাকতে তৎপরতা শুরু করেছে দিল্লি। এই লক্ষ্যেই কাগজপত্র না থাকা ১৮০০০ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে মোদি প্রশাসন। এসব অভিবাসীকে চিহ্নিত করতে ট্রাম্প সরকারের সাথে কাজও চলছে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের কাগজপত্র ছাড়া প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন। মেক্সিকো ও এল সালভেদরের পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যায় ভারত তৃতীয়।
এমনিতেই অভিবাসন ইস্যু নিয়ে ট্রাম্প কোন ছাড় দিতে রাজি নয়। মোদিকে ভালো বন্ধু বলে পরিচয় দিলেও ব্রিক্স দেশগুলোর আলাদা মুদ্রানীতির ব্যবস্থায় ভারতসহ অন্য দেশগুলোকেও শতভাগ শুল্কের হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। এছাড়াও চীনের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানালেও ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মোদির দাওয়াত না পাওয়া অশনি সংকেত বলেই ধরে নেয় ভারত।
তাই এত বেশি সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী থাকা ভারতের উপর ট্রাম্পের ক্ষোভ আসা স্বাভাবিক। ট্রাম্পের সাথে যেকোনো সংঘাত এড়াতে আগেভাগেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিচ্ছে দিল্লি।
মোদি সরকার জানিয়েছে, বৈধ উপায়ে আরো বেশি ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর সুযোগ দিতেই এমন নীতি নেয়া হচ্ছে। কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে এইচওয়ানবি ভিসা দেয়, ২০২৩ সালে তার ৭৫ শতাংশই পেয়েছে ভারতীয়রা। যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাওয়া কর্মক্ষম ভারতীয়দের জন্য এই ভিসা অনেকটাই লাইফলাইন। অবৈধ অভিবাসনের চাপে সেই ভিসাও বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই এই নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখিয়ে আসছে ভারত সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর সে সময় জানান, ট্রাম্প আশায় অনেক দেশ চাপে পড়লেও ভারত তার ব্যতিক্রম যদিও এখন পর্যন্ত ভারতের সুবিধাজনক অবস্থা থাকার কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
মো. মহিউদ্দিন