ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য ‘দুঃসাধ্য’ কাজ

মার্কিন শুল্ক হুমকি, কানাডার অর্থনীতি রক্ষায় কে আসছে?

প্রকাশিত: ০১:৩২, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

মার্কিন শুল্ক হুমকি, কানাডার অর্থনীতি রক্ষায় কে আসছে?

ছবি : সংগৃহীত

কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ এবং মার্কিন শুল্ক হুমকির মুখে পড়তে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর কানাডার $২.১ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির জন্য এক নতুন ধাক্কা এসেছে।

স্থবির প্রবৃদ্ধি, গৃহায়ন সংকটসহ অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত কানাডা এখন তাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুল্কের হুমকির মুখে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গভীরভাবে অজনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে প্রতিস্থাপন করে যিনি দায়িত্ব নেবেন, তার জন্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলা কঠিন হবে।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের কানাডা ইকোনমিকসের পরিচালক টনি স্টিলো আল জাজিরাকে বলেন, "ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার কাজ খুবই কঠিন কারণ শিগগিরই একটি দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নতুন নেতৃত্ব দিয়ে জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট নাও হতে পারে।"

মার্কিন শুল্ক হুমকি

ট্রাম্প সোমবার তার অভিষেক বক্তৃতায় শুল্ক নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও কয়েক ঘণ্টা পরই ঘোষণা দেন যে, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

ডালহাউসি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক লার্স ওলসবার্গ বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ শুরু হলে কানাডার রপ্তানির কী হবে, সেটিই মূল উদ্বেগ।" 

কানাডার মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়, যা দেশের মোট জিডিপির ২০ শতাংশ।

২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে এবং সম্ভাব্য মন্দা সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের উত্তর আমেরিকা বিষয়ক উপ-প্রধান অর্থনীতিবিদ স্টিফেন ব্রাউন। তবে তিনি এটিকে কৌশলগত চাপ হিসেবে দেখছেন।

অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ

ট্রাম্পের হুমকি ছাড়াও কানাডা অভ্যন্তরীণ সমস্যার মুখোমুখি। গৃহায়ন সংকট, শিশু যত্ন এবং স্বাস্থ্যসেবার অবনতিতে জনগণের অসন্তোষ তীব্র।

এছাড়া কার্বন কর নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। ২০১৯ সালে চালু হওয়া এই করের পরিমাণ এখন $৮০ কানাডিয়ান ডলার প্রতি টন, যা ২০৩০ সালে $১৭০ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছাবে। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পলিয়েভ এই কর বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ইমিগ্রেশন নীতিতেও পরিবর্তন আনতে হয়েছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে কানাডার জনসংখ্যা ৩.২ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে গৃহায়ন ও জনসেবা সংকট বেড়েছে। এরই মধ্যে জনমত ইমিগ্রেশন নিয়ে নেতিবাচক হয়ে উঠেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসন্ন সরকারকে স্থায়ী বিনিয়োগ ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মতো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান করতে হবে।

চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ

কানাডার অর্থনীতি বর্তমানে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপে জর্জরিত। ট্রুডোর উত্তরসূরিকে একদিকে মার্কিন শুল্ক হুমকির মোকাবিলা করতে হবে, অন্যদিকে দেশের জনগণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ মেটাতে হবে।

সূত্র: আল জাজিরা

মো. মহিউদ্দিন

×