বেগম খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এক ছাতার নিচে অর্থাৎ ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ বা সমন্বিতভাবে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা। বুধবার লন্ডনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান।
ডা. জাহিদ বলেন, ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ৮ জানুয়ারি থেকে তিনি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টগুলো প্রফেসর ডা. জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল বোর্ড পর্যালোচনা করেছেন এবং পরে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ডা. জাহিদ বলেন, দু’একদিনের মধ্যে লন্ডনের আরও দুইজন চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে দেখবেন। তার চিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের যে পদ্ধতি অর্থাৎ তাকে এখন ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা চলছে লিভারের জন্য, কিডনির জন্য, হার্টের জন্য, ডায়াবেটিস, প্রেসার ও রিউমোটো আর্থ্রাইটিজ প্রত্যেকটির জন্য।
এর বাইরেও আরও যদি কোনো চিকিৎসা করা যায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স হাসপাতালের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন যাতে আমরা এটাকে এক ছাঁদের নিচে চিকিৎসা যেটাকে বলে ‘ওয়ান আমব্রেলা’ অর্থাৎ ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো সেটা করার ব্যাপারে তার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তার বয়স, তার রোগে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে যে ধরনের ক্ষতি গত সাড়ে ৫ বছর যাবত বাংলাদেশে বন্দি থাকা অবস্থায়, সুচিকিৎসা কম পাবার জন্য যা হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তখন দেশের বাইরে নিতে না পারার জন্য যা হয়েছে সেগুলো বিবেচনায় রেখে, তার বয়সের কথা বিবেচনায় রেখে তার জন্য যেটা সবচেয়ে মঙ্গলজনক হবে, সেই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি লন্ডনের চিকিৎসা বোর্ড অনুসরণ করবে বলে আমরা আশাকরি।
লন্ডন ক্লিনিক তার জন্য সে ধরনের চিকিৎসার কথাই চিন্তা করছে। সেটা হয়তো আগামী দু’তিন দিন পর যখন আবার মেডিক্যাল বোর্ডের এক্সটেন্ডেড মেম্বার আছেন তারাও এ ব্যাপারে মতামত দেবেন। পরে সেই অনুযায়ী ইনশাল্লাহ তার চিকিৎসা চলবে।
ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও সুস্থতার জন্য আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। শুধু লন্ডনসহ প্রবাসীরাই নয়, বাংলাদেশের মানুষ উদগ্রীব হয়ে আছেন ম্যাডামের সুস্থতার জন্য। সাংবাদিকদের মাধ্যমে ম্যাডামের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করছি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন মায়ের জন্য।
ডা. জাহিদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যসহ নিকট আত্মীয়রা সার্বক্ষণিকভাবে তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছেন। বিশেষ করে তার ছেলে তারেক রহমান, দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান, সৈয়দা শামিলা রহমান, তিন নাতনি জাইমা রহমান (তারেক রহমানের মেয়ে), জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান (আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে) সব সময়ই খোঁজ-খবর রাখছেন। লন্ডনসহ দেশের বাইরে যারা আছেন তারা ওভার টেলিফোনে সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
ডা. জাহিদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ দলের নেতারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সবসময় নিরবচ্ছিন্ন কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিদিনই সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে গিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।