ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ নেয়ার সময়, পানামা খাল দখল করার ইচ্ছা এবং মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার কথা আবারো উল্লেখ করেন।
ট্রাম্প আগে থেকেই পানামা খাল এবং মেক্সিকো উপসাগরের বিষয়ে কথা বলেছেন। সোমবার, তিনি স্পষ্টভাবে জানান যে, তিনি এই দুই পরিকল্পনাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চান।
"ম্যানিফেস্ট ডেস্টিনি"—ট্রাম্পের বক্তৃতা
শপথগ্রহণের সময়, ট্রাম্প আমেরিকার ভূমি সম্প্রসারণের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি মহাকাশ অনুসন্ধানের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে গিয়ে ১৯শ শতাব্দীর "ম্যানিফেস্ট ডেস্টিনি" নীতির কথা তুলেন, যা বলে যে, আমেরিকাকে আঞ্চলিকভাবে সম্প্রসারণ করতে হবে।
"আমরা মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে 'গালফ অব আমেরিকা' রাখব," তিনি বলেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী কণ্ঠস্বরের মধ্যে উত্তেজনা ছিল স্পষ্ট।
তিনি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাককিনলে এবং থিওডোর রুজভেল্টের প্রশংসা করেন। রুজভেল্টকে তিনি পানামা খালের নির্মাণের জন্য কৃতিত্ব দেন।
পানামা খাল: ট্রাম্পের দাবি এবং বাস্তবতা
ট্রাম্প তাঁর বক্তৃতায় বলেন, "পানামা খাল বোকামি করে প্যানামাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।" তিনি আরও দাবি করেন, "আমরা এই ‘বোকামি উপহার’ থেকে অত্যন্ত খারাপভাবে আচরণ পেয়েছি এবং পানামার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়েছে।"
তবে, পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা আমাদের খাল এবং প্রশাসন নিয়ে কোনও বিদেশি দেশের হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।"
পানামা খাল কার দখলে?
পানামা খাল বর্তমানে পানামার সরকারের মালিকানাধীন। ১৯৭৭ সালের চুক্তির মাধ্যমে, ১৯৯৯ সালে প্যানামাকে খালটির মালিকানা প্রদান করা হয়েছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খালটির কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার ছিল, তবে পানামার মালিকানা কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নয়।
প্যানামা খাল দখল করা কি সম্ভব?
এখন পর্যন্ত, ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, কারণ এটি জাতিসংঘের চুক্তি লঙ্ঘন হতে পারে। এটি পানামার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হবে, এবং এমন একটি পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনে বিরোধ সৃষ্টি করবে।
মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন
ট্রাম্প মেক্সিকো উপসাগরের নাম 'গালফ অব আমেরিকা' রাখার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এর নাম পরিবর্তন করতে পারবেন, তবে এটি আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত হবে না।
নামের বিতর্ক
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জলপথের নাম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, যেমন, দক্ষিণ চীন সাগর, যেখানে ফিলিপাইন দাবি করে তা 'ওয়েস্ট ফিলিপিন সি' হওয়া উচিত।
মোটকথা, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়ন করা কঠিন, তবে এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও চুক্তির মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি করবে।
মারিয়া