সোমবার (২০ জানুয়ারি) দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নেওয়ার পরপরই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ বাতিলের আদেশ।
তবে মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব একজন নাগরিকের অধিকার। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী কিংবা প্রাকৃতিকভাবে নাগরিক হওয়া ব্যক্তিরা মার্কিন নাগরিকত্ব লাভের যোগ্য। এই সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করতে হলে দীর্ঘ এবং জটিল আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
কোনো পরিবর্তন কার্যকর করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ স্টেট পার্লামেন্ট, সিনেট এবং হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস করতে হবে। এছাড়া, বিষয়টি আদালতেও চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এরই মধ্যে ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা মামলা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এ উদ্যোগ আইনি বাধার মুখে পড়বে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার হাতে কিছু ক্ষমতা রয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব লাভের প্রক্রিয়া জটিল করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বার্থ ট্যুরিজম নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিনের। অনেক বিদেশি মা-বাবা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, কারণ সেখানে জন্মের পরই শিশুটি নাগরিকত্ব লাভ করে। ট্রাম্প এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে না পারলেও পাসপোর্ট প্রদান প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করতে পারেন। এতে অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার শিশু অনিবন্ধিত অভিভাবকের ঘরে জন্মগ্রহণ করে। ২০২২ সালের হিসাবে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১২ লাখ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পুরোপুরি বাতিল করা হয়, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে অনিবন্ধিত অভিবাসীর সংখ্যা ৪৭ লাখে পৌঁছাতে পারে।
ট্রাম্প আরও ঘোষণা দিয়েছেন যে, ১১ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে। তবে এটি বাস্তবায়ন করাও বেশ কঠিন। কারণ এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
সূত্র: বিবিসি
তাবিব